শিশির অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সুস্থ হলেই শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানাবে তৃণমূল। এমনটাই সূত্র মারফত্ জানা গিয়েছে। রবিবার এগরায় অমিত শাহের এগরার জনসভার মঞ্চে হাজির হন কাঁথির বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ। সেই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল সংসদীয় দল।
অভ্যন্তরীণ আলোচনায় স্থির হয়, ঠিক যে ভাবে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছিল দল। সেই চিঠির বয়ানেই স্পিকারের কাছে শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের আবেদন জানাবেন লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা। কিন্তু সেই পথে অন্তরায় হয়েছে স্পিকারের অসুস্থতা। সোমবার কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে দিল্লির এমস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ওম। তাই স্থির হয়েছে তিনি সুস্থ হয়ে ফিরলেই, চিঠি দেবে তৃণমূল সংসদীয় দল।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২২ জন সাংসদ জিতেছিলেন তৃণমূলের। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজিয়েট ময়দানে অমিত শাহের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই বিজেপি-তে যোগ দেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল। তারপরেই তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পিকারকে চিঠি দিয়ে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের আবেদন করেছিলেন।
মঙ্গলবার কলকাতায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে শিশিরের দলত্যাগ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘যে কেউ যে কোনও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে যেতেই পারেন। তবে নৈতিকতার খাতিরে দলের দেওয়া পদগুলি থেকে পদত্যাগ করা আবশ্যক ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমনটা করা হয়নি। দল নিশ্চয়ই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’’ তারপরেই তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান সাংসদ জানান, যথা সময় শিশিরের ক্ষেত্রে পদক্ষেপে করবে দল। তারপরেই জানা গিয়েছে, স্পিকার সুস্থ হলেই কাঁথির বর্ষীয়ান সাংসদের পদ খারিজের দাবিতে চিঠি দেবে বাংলার শাসকদল।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সাল থেকে শিশির কাঁথির তৃণমূল সাংসদ। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও জোড়াফুলের প্রতীকে লড়েই জয় পেয়েছেন তিনি। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বরে পুত্র শুভেন্দুর দলত্যাগের পরেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতির পদ থেকে, ছেঁটে ফেলা হয় দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকেও। তখন থেকেই শিশিরের দলত্যাগের জল্পনা চলছিল, রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভায় বিজেপি-তে যোগদানের পরেই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করতে পদক্ষেপ করছে তৃণমূল।