দেওয়াল লিখছেন বিজেপি প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র।
যখনই ভোটের দামামা বাজে, তাঁর ব্যস্ততার শেষ থাকে না। এলাকায় প্রার্থীর হয়ে ভোট প্রচারের জন্য দেওয়ালে লেখার কথা উঠলেই ডাক পড়ত বোলডাঙার সুমিত ঘোষের। ভোটের বাইরে দলের যে কোনও কর্মসূচিতেই তাঁর হাতের লেখা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনের ওপরেই বড় ভরসা করত তাঁর দল। এ বার সুমিত নিজেই বিজেপির প্রার্থী। ফলে ভোটের প্রচারে এলাকায় চষে বেড়ানোর ফাঁকেই দলীয় কর্মীদের অনুরোধে কখনও-সখনও রং-তুলি হাতে দেওয়াল লিখতে নেমে পডতে হচ্ছে তাঁকে।
ছোট বয়স থেকেই আঁকা এবং ক্যালিগ্রাফির কাজ করার দিকে ঝোঁক ছিল সুমিতের। তিনি ভাল আঁকতে পারেন। পাশাপাশি, তাঁর হাতের লেখাও লোকের নজর কাড়ে। সুমিতের এই গুণপনাকে অবশেষে কাজে লাগাতে ভুল করেনি স্থানীয় বিজেপি। দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে, ভোটের সময় দেওয়াল লিখতে দেখা গিয়েছে সুমিতকে। অতীতে বিজেপির সে ভাবে এলাকায় প্রভাব ছিল না। তবে বছরের পর বছর ধরে দলের হয়ে একনিষ্ঠ কর্মীর মতো প্রচার, দেওয়াল লিখন করেছেন তিনি। প্রায় তিন দশক এভাবেই দেওয়াল লিখছেন তিনি। এলাকায় ভাল দেওয়াল লিখিয়ে হিসেবেও তাঁর নামডাক যথেষ্ঠই।
লোকসভা নির্বাচন থেকে বিধানসভা নির্বাচন। পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত ভোট— দেওয়াল লেখার কাজে তিনি দলের প্রধান সৈনিক। বেলডাঙায় বিজেপি-র পরিচিত মুখ, দু’বারের বেলডাঙা পুরসভার কাউন্সিলর সুমিত ভোটের প্রচারে দলের বড় ভরসা। কিন্তু এবার বেলডাঙা বিধানসভায় সুমিতকেই তাঁর দল প্রার্থী বেছেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই জোরদার প্রচারে নেমেছেন সুমিত। দেওয়ালে পদ্মফুল আঁকার পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নিজের নামও লিখছেন তিনি। তাঁকে সাহায্য করছেন দলের কর্মীরাও। সুমিত জানান, গত কয়েক দিন ধরে বেলডাঙার বেশ কিছু এলাকার দেওয়ালে তিনি নিজেই নিজের নাম লিখেছেন। আগেই তাঁর হাতে আঁকা দলীয় প্রতীক এবং প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা লেখা ছিল অনেক দেওয়ালে। এখন সেখানে প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম লিখছেন তিনি। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে স্মিত হেসে সুমিত বলেন, “কম বয়স থেকেই বিজেপির দেওয়াল লিখছি। লোকসভা ভোট বা বিধানসভা ভোটের মতো বড় ভোটে অন্যের নাম প্রার্থী হিসেবে দেওয়ালে লিখি। এ বার নিজের নাম লিখতে ভালই লাগছে। এতে এলাকার মানুষ ও দলের অনেক কর্মীই খুশি।” তবে বরাবরের দেওয়াল লিখিয়ে বলে পরিচিত সুমিতকে প্রার্থী হতে দেখে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।