বিকল্প: সুখরামের স্ত্রী রান্না করছেন কাঠের জ্বালে। নারায়ণ দে
উজ্জ্বলা প্রকল্পে গ্যাসের সংযোগ অনেক দিন আগেই নিয়েছেন তিনি। বাড়িতে রয়েছে আভেন, সিলিন্ডারও। এই মুহূর্তে তাতে রয়েছে বেশ খানিকটা গ্যাস। তার পরও বিনোদ ভগতের পরিবারে দৈনন্দিন রান্নায় ভরসা সেই লকড়ি, কাঠকুটো।
আলিপুরদুয়ার বিধানসভা এলাকার বনচুকামারির সাতকোদালি গ্রামে বাড়ি বিনোদ ভগতের। বিঘা ছয়েক জমির উপর চা বাগান করেছেন বিনোদ। তিনি আবার বিজেপির এসটি মোর্চার স্থানীয় বুথের সহ-সভাপতিও। তার পরও তিনি যে উজ্জ্বলা প্রকল্পে পাওয়া গ্যাসের সিলিন্ডার কিনতে নাজেহাল, তা তাঁর কথাতেই পরিষ্কার।
নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বিনোদ বলেন, “গ্যাসের দাম বড্ড বেড়েছে। তার উপর সিলিন্ডার কিনতে প্রায় আড়াই কিলোমিটার যেতে হয়। তাতেও কিছুটা খরচ। ভর্তুকির টাকাও ঠিকমতো অ্যাকাউন্টে ঢোকে কি না অনেক সময় বুঝতেও পারি না। তাই লকড়িতেই বেশি রান্না করি। বাগান থেকে লকড়ি কুড়িয়ে আনি।” তার পরেই বলেন, “গ্যাসের দাম একটু কমলে সবারই সুবিধা হবে।”
তাঁর এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত, গ্রামের বাকিরাও। সাতকোদালি গ্রামে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবার রয়েছে। তাদের কেউ দুই বছর আগে তো কেউ তিন বছর আগে উজ্জ্বলা গ্যাসের সংযোগ নিয়েছেন। সুখনাথ ওরাওঁ বলেন, “আমার স্ত্রীর নামে একটা গ্যাসের সংযোগ নিয়েছিলাম। তার পর অনেক কষ্টে কয়েকবার সিলিন্ডার কিনেছি। কিন্তু প্রতিবার ভর্তুকি পাইনি। আর এখন যা দাম বেড়েছে, তাতে নতুন সিলিন্ডার কেনার ক্ষমতা আমার নেই।’’ গৃহবধূ টুলো রায় বলেন, “উজ্জ্বলার সংযোগ যখন দেওয়া হয়, তখন তো গ্রাম জুড়ে হইচই হয়েছিল। এখন বেশিরভাগ বাড়িতেই সেই গ্যাস ব্যবহার হয় না।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “গরিব মানুষের মনে আশা জাগিয়ে তাদের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলাই মোদী সরকারের কাজ। এটা তেমনই একটা উদাহরণ।” বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অবশ্য দাবি, “আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির ফলেই এখানেও গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়ছে। সে জন্যই গরিব মানুষের কথা ভেবে উজ্জ্বলা প্রকল্পে ভর্তুকিও বেশি দিচ্ছে সরকার।” যদি সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, বাস্তবে সকলেই একই ভর্তুকি পান। এখন সেটা সিলিন্ডার প্রতি ২০ টাকার কম।