রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
গঙ্গাজল দিয়ে পরিষ্কার করে প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস‘শুদ্ধ’ করল তৃণমূল। হাওড়ার ডোমজুড়ের পাকুরিয়ার ওই কার্যালয়টি রাজীব তৃণমূলের বিধায়ক থাকার সময় ব্যবহার করতেন। মঙ্গলবার সেই অফিসের দখল নিয়ে তৃণমূল জানিয়েছে, আপাতত এই অফিসটিকেই তারা বিধানসভা নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করবে। শুধু তা-ই নয়, দলের সঙ্গে ‘বেইমানি’ করা রাজীবকে হাওড়ার মানুষও গোহারা হারাবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূল বরাবরই দখলদারির রাজনীতি করেছে, এখনও করছে। তবে এতে তাদের কোনও লাভ হবে না।
গত ১০ বছর ধরেই হাওড়ার পাকুরিয়ার এই অফিসটি রাজীবের জনসংযোগ ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। একটি বাড়ির নিচের তলা ভাড়া নিয়ে সেখানেই নিজের সরকারি কাজকর্ম করতেন রাজীব। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর রাজীবকে অবশ্য এই অফিস ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার তাঁর এই অফিস দখল করা প্রসঙ্গে হাওড়ার জেলা পরিষদের ‘মেন্টর’ কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘এখন তো অফিস দখল করা হয়েছে। বিধানসভা ভোটে বেইমান রাজীবকেও গোহারা হারাবে তৃণমূল।’’
একসময়ের ঘনিষ্ঠ কল্যাণের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই রাজীবের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোটে কল্যাণের বিরুদ্ধে রাজীব নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তাঁকে হারিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। কিন্তু, ব্যাক্তিগত ভাবে ভাড়া নেওয়া বাড়ি কি কোনও রাজনৈতিক দল এ ভাবে দখল করতে পারে? বাড়ির মালিক মন্টু সাঁতরা জানিয়েছেন, মাত্র ৩ মাস রাজীব ওই বাড়ির ভাড়া দিয়েছিলেন। গত ১০ বছরে আর ভাড়া মেটাননি তিনি। উল্টে কল্যাণের সঙ্গে মন্টুর সুসম্পর্ক থাকার কারণে রাজীব তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছিলেন বলেও অভিয়োগ। সেই মামলার কারণে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিতে হয় মন্টুকে।
পাকুরিয়ায় রাজীবের অফিস ছিল এই বাড়িতেই। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির হাওড়া সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহা পাল্টা বলেন, ‘‘অফিসটি যদি রাজীবের নিজস্ব হয়ে থাকে, তাহলে তৃণমূল দখল করে কী করে? উনি যদি ভাড়া না দিয়ে থাকেন, তবে পরেও ভাড়া দিতে পারেন। কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করেনি তৃণমূল। আসলে তৃণমূল বরাবরই দখলদারির রাজনীতি করছে। আবারও তারা প্রমাণ করল, এটাই ওদের স্বভাব।’’ এব্যাপারে রাজীবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি অবশ্য ফোন ধরেননি।