দলীয় প্রার্থী ও নেতৃত্বের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। বিএনআর ময়দানে। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুরের মাটিতে নির্বাচনী প্রচার। তাই শিক্ষার উন্নয়নে আশ্বাস থেকে কাটমানি নিয়ে অভিযোগ, সবেতেই মাটির আবেগ ছুঁয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলায় কথা বললেন। কখনও তাঁর গলায় সাঁওতাল বিদ্রোহ, স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা তো কখনও কটাক্ষ, কেন্দুপাতাতেও কাটমানি!
শনিবার খড়্গপুরের বিএনআর ময়দানে ছিল বিজেপির নির্বাচনী জনসভা। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার ১৯জন প্রার্থীর প্রচারে এই জনসভার প্রধান বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গোড়াতেই ‘জয় জোহার, জয় গরাম’ বলে আদিবাসী আবেগ ছুঁয়ে যান তিনি। বাংলায় কেমন আছেন জানতে চেয়ে মোদী বলেন, “খড়্গেশ্বর মহাদেব, ঝাড়েশ্বর মহাদেব, মা সর্বমঙ্গলা, মা মহিষাসূরমর্দিনী এমন অনেক তীর্থক্ষেত্রের এই ভূমিকে আমি প্রণাম করি।” তারপরই প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা বলুন এখানে কেন্দুপাতা বিক্রির জন্যও কাটমানি দিতে হয় কি না? আদিবাসীদেরও দিতে হয় কি না?’’ আবার পরক্ষণেই তিনি সিন্ডিকেট-মাফিয়ার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন সুবর্ণরেখা-কাঁসাইকে। দাবি করেছেন, “এখানে একটাই উদ্যোগ— মাফিয়া উদ্যোগ। সুবর্ণরেখা ও কাঁসাই নদীতে অবৈধ খননের তার কোথায় জুড়ে রয়েছে সেটা এখানের বাচ্চারাও জানে।”
স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ভূমি রাষ্ট্রসেবায় শহিদ ক্ষুদিরাম বসু, বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগো, বীরেন্দ্রনাথ শাসমল, নির্মলজীবন ঘোষ এমন অগুনতি বিপ্লবীর জন্ম দিয়েছে। এখানকার সাঁওতাল আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।’’
খড়্গপুর শহরের ঐতিহ্য টেনে মোদী বলেন, “খড়্গপুরের এই কেন্দ্রে মিনি ভারতের ঝলক দেখা যায়। ভারতের বিবিধ ভাষার শক্তি দেখতে পাওয়া যায়। খড়্গপুরের এত বড় রেল প্ল্যাটফর্ম, ভারতের প্রথম আইআইটি, এই ভূমির গৌরব। ভারতীয় রেলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এখানের লোকেদের অনেক বড় যোগদান রয়েছে। এই ঐতিহাসিক ভূমিতে আপনাদের আসল পরিবর্তনের বিশ্বাস দিতে এসেছি।” শুধু যে রেলশহর নয়, জঙ্গলমহলের কৃষকদের কথাও বিজেপি ভাবছে সেটাও তিনি বুঝিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, “জঙ্গলমহলের পুরো অঞ্চলে কৃষি ব্যবস্থাকে শোধরানো হবে। এই এলাকায় সেচের সুবিধা বাড়ানো হবে। হিমঘরের নেটওয়ার্ক বাড়ানো হবে। এতে এখানের আলু চাষে যুক্ত কৃষকদেরও লাভ হবে।” পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে মোদী বলেন, “দিদির ট্র্যাক রেকর্ড দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া।”