শিশিরকে কটাক্ষ পার্থর। —ফাইল চিত্র।
খাতায়কলমে এখনও তিনি তৃণমূল সদস্য। পূর্ব মেদিনীপুরর জেলার চেয়ারম্যানও। কিন্তু তাঁর মন ‘অন্য কোথাও’ পড়ে রয়েছে। সে দিকে যাওয়ার জন্য ‘দু’পা বাড়িয়ে রেখেছেন’ তিনি। দলের প্রবীণ নেতা শিশির অধিকারী সম্পর্কে এমন মন্তব্য করলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ যে হেতু দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, সে হেতু শিশির সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যকে তৃণমূল তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদটি খুইয়েছেন তাঁর বাবা শিশির। আমন্ত্রণ পেলেও দলের কোনও কর্মসূচিতেই দেখা যায় না তাঁকে। তবে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটে দাঁড়ানোর খবর সেই সঙ্ঘাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। এ নিয়ে বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেন শিশির। শাসক দলের তরফে তাঁর বাড়ির চার দিকে নজরদারি বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেন, নন্দীগ্রামে মমতার পক্ষে জোরকদমে প্রচার শুরু হলে তাঁর ছেলেকে যদি আক্রমণ করা হয়, তা হলে ছেড়ে কথা বলবেন না তিনি।
শিশিরের এই মন্তব্যেই ‘চটেছে’ শাসকদল। শিশিরের সঙ্গে তাঁদের বর্তমান রসায়ন নিয়ে প্রশ্ন করতেই, প্রবীণ রাজনীতিককে কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, ‘‘শিশিরদা প্রবীণ মানুষ। সবাই বুঝতে পারছেন ওঁর হৃদয় কোথায়, আর কোথায় শরীর। আগে সেটা ঠিক করে নিন। তিনি যে দু’পা বাড়িয়েই রয়েছেন, সেটা তাঁর বক্তব্যেই প্রমাণিত।’’
দীর্ঘ দিন ধরে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি নিয়ে চলা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র (জিতেন) তিওয়ারি মঙ্গলবার বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। বুধবার তাঁকেও কটাক্ষ করেন পার্থ। বলেন, ‘‘কত বার যাবেন, কত বার আসবেন। শুধু যাওয়া আর আসা। শুধু স্রোতে ভাসা।’’
তবে শিশিরের বুধবারের মন্তব্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, শুভেন্দু, সৌম্যেন্দুর পর তা হলে অধিকারী পরিবারের কুলপতিও কি এ বার পদ্মশিবিরে যাবেন? বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর গত ২৯ ডিসেম্বর খড়দহে শুভেন্দু ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন যে, তিনি একা নন, তাঁর বাড়ির সকলে পদ্ম ফোটাবেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে, তার পরই বিজেপি-তে যোগ দেন সৌম্যেন্দু। তমলুকের সাংসদ পদটি ধরে রাখলেও, বিভিন্ন হাসপাতাল ও কলেজ পরিচালন সমিতির মতো বিভিন্ন সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দেন শুভেন্দুর অন্য ভাই দিব্যেন্দু। তাঁর বিজেপি-তে যাওয়া নিয়েও জল্পনায় অন্ত নেই।