প্রতীকী ছবি। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনের কাজে সহযোগিতা করছেন না, এই অভিযোগে আমতা-১ ব্লকের উদং উত্তরপাড়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিতু সাহাকে কারণ দর্শানোর চিঠি (শো-কজ়) ধরাল প্রশাসন। গত পাঁচ বছরে স্কুলের সমস্ত আয়ব্যয়ের হিসেব নিয়ে তাঁকে ২২ মার্চ বিডিও-র সঙ্গে দেখা করতেও বলা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নিতুদেবীর দাবি, ‘‘আমি নির্বাচনের কাজে প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। কিন্তু কিছু অন্যায্য দাবি করা হয়েছিল। আমি সে সব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম মাত্র।’’ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে, এই অভিযোগে তিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দিয়েছেন বলেও নিতুদেবী জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসন নিতুদেবীর অভিযোগ মানেনি।
নিতুদেবী জানান, স্কুলে একটি বুথ হবে বলে ব্লক প্রশাসন জানানোয় তিনি কথামতো নলকূপ বসান। বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করান। কয়েকদিন আগে তাঁকে জানানো হয়, স্কুলের অফিসঘরটি ফাঁকা করে দিতে হবে। সেখানে রাতে ভোটকর্মীরা থাকবেন। ভোটারদের ঢোকা-বেরনোর জন্য একটি শ্রেণিকক্ষের দেওয়াল ভেঙে ফেলার কথাও বলা হয়। খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নিতুদেবী।
নিতুদেবীর কথায়, ‘‘প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছিলেন, স্কুলের জরুরি তহবিল থেকে খরচ করতে হবে। কিন্তু আমি স্কুল শিক্ষা দফতরে ফোন করে জানতে পারি, স্কুলের জরুরি তহবিল নির্বাচনের কাজে খরচ করা যাবে না। সে কথা প্রশাসনের কর্তাদের জানিয়ে দেওয়ার পরেই আমাকে অবর স্কুল পরিদর্শক কারণ দর্শানোর চিঠি ধরিয়ে হিসাবের খাতাপত্র নিয়ে বিডিও-র সঙ্গে দেখা করতে বলেন।’’ নিতুদেবীর আরও ক্ষোভ, ‘‘অফিসঘরের বিপুল নথিপত্র এবং মিড-ডে মিলের চালের বস্তা সরিয়ে অন্যত্র রাখার দায়িত্ব আমাদের উপরেই চাপানো হয়। ওই সব জিনিস না সরালে বাহিনী দিয়ে তা বাইরে ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।’’
নিয়ম মেনেই তিনি নিতুদেবীকে শো-কজ়ের চিঠি পাঠিয়েছেন এবং স্কুলের হিসেবের খাতাপত্র নিয়ে ব্লক অফিসে যেতে বলেছেন বলে দাবি করেছেন সিরাজবাটী চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শক দীপঙ্কর কোলে। তিনি বলেন, ‘‘ব্লক অফিসের তরফ থেকেই আমাকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাউকে হেনস্থা করা বা রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।’’
বিষয়টিতে রাজনীতির রং দেখছেন নিতুদেবীর স্বামী তথা বিজেপি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য নেতা পিন্টু পাড়ুই। তিনি বলেন, ‘‘আমি যেহেতু বিরোধী দল করি, তাই স্ত্রীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আমি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’