নরেন্দ্র মোদীর ছবি সম্বলিত এই রকম সব বিজ্ঞাপন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের তোলা আপত্তির জেরে রাজ্যের সব পেট্রল পাম্প থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সরানোর নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে এমনটাই। ওই সংবাদ সংস্থাটির দাবি, রাজ্যের পেট্রল পাম্পগুলিতে মোদীর ওই ছবি আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। ছবি সরাতে পেট্রল পাম্প ডিলারদের ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে।
পেট্রল পাম্পে মোদীর ছবি নিয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের ওই পদক্ষেপকে ঘিরে দিনভর তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে জারি ছিল রাজনৈতিক টানাপড়েন। দিনের শেষে অবশ্য মোদীর ছবি সরানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ওই সব বিজ্ঞাপন আদর্শ আচরণ বিধি বিরোধী। সে কারণেই সেগুলি সরিয়ে ফেলতে হবে। অনেকের মতে, প্রধানমন্ত্রী শুধু লোকসভা নয়, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটেও বিজেপি-র প্রচারের তারকা ‘মুখ’ও বটে। সেক্ষেত্রে কমিশনের এই নির্দেশ বিজেপি-র কাছে ‘ধাক্কা’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর জারি হয়েছে আদর্শ আচরণ বিধি। এই আবহে, করোনা টিকার শংসাপত্র বা পেট্রল পাম্পে রান্নার গ্যাসের বিজ্ঞাপনে মোদীর ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছিল তৃণমূল। জোড়াফুল শিবিরের অভিযোগ, ভোট ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করায় আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। ওই ছবির জেরে ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই বুধবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দফতরে যায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। রাজ্যের উপ-মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করার পরে ফিরহাদ বলেন, ‘‘আশা করি সুবিচার পাব। আশা করি বিজেপি-র কথায় অন্তত ভারতের নির্বাচন কমিশন প্রভাবিত হবে না।’’ যদিও সেই সময় বিজেপি তৃণমূলের তোলা ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, করোনা টিকার শংসাপত্রে মোদীর ছবি ব্যবহার নিয়ে সোমবার আপত্তি তুলেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা ঘোষণা করে তিনি টুইট করেন, ‘ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। তাও প্রধানমন্ত্রীর ছবি করোনা টিকার নথিতে নির্লজ্জের মতো প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরবে তৃণমূল’। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জোড়াফুল শিবিরের পদক্ষেপ এবং কমিশনের ছবি সরানোর নির্দেশ।