মেজাজে দুই প্রার্থী। ছবি: বিকাশ মশান।
এক জন সকাল-সকাল ভোট দেওয়ার খানিক পরেই ভিড়িঙ্গি পার্টি অফিসে চলে গিয়েছিলেন। আর বেরোননি। দিনভর সেখান থেকেই ফোনে যোগাযোগ রাখলেন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। আর এক জনও ভোটটা দিয়েছিলেন সকালেই। তার পরে সারা দিন দৌড়ে বেড়ালেন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। গোলমালের খবর পেলেই পৌঁছে গেলেন ঘটনাস্থলে।
দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে ভোটের দিন দেখা গেল এমন দুই বিপরীত মেজাজে।
সকালে সবুজ পাঞ্জাবি-সাদা পায়জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অপূর্ববাবু সোজা চলে গিয়েছিলেন ভিড়িঙ্গি কালীবাড়িতে। প্রণামপর্বের পরে পুরোহিত জবার মালা পরিয়ে দেন। এর পরে প্রার্থী পৌঁছে যান ভিড়িঙ্গি প্রাথমিক স্কুলে, নিজের বুথে। ততক্ষণে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে সেখানে। অপূর্ববাবু গিয়ে দাঁড়ান সবার পিছনে। কিছুক্ষণ পরে কয়েক জন এসে জানালেন, তাঁর জন্য আগে থেকে লাইন দিয়ে রাখা আছে, পুরুষদের লাইনের সামনে। দিনের প্রথম ভোটটি দিলেন অপূর্ববাবুই। তার পরে বেরিয়ে সামনের চায়ের দোকানে চা খাওয়ার ফাঁকে টুকটাক কথাবার্তা সেরে গেলেন ভিড়িঙ্গি টিএন হাইস্কুলের বুথের দিকে। সেখানে গেটের সামনে দাঁড়িয়েই ভোটারদের সঙ্গে কথাবার্তা বললেন। এর পরে সোজা পার্টি অফিস। সারা দিন ধরে কর্মীদের সঙ্গে মোবাইলেই যোগাযোগ রাখলেন তিনি।
কালো-সবুজ টি শার্টে বিশ্বনাথবাবুও সকাল-সকাল বেরিয়ে পড়েছিলেন। বিভিন্ন বুথে ঘুরে এজেন্ট বসানোর তদারকি করলেন। লিলুয়াবাঁধ শিউবার্ন প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে ভোট দেন সাড়ে ৭টা নাগাদ। তার পরে সারা দিন ঘুরলেন বুথে-বুথে। যেখানেই গণ্ডগোলের খবর পেয়েছেন, ছুটে গিয়েছেন। দুপুরে যান বেনাচিতির চারটি ওয়ার্ডে। যেগুলিতে সকাল থেকেই খুচখাচ ঝামেলা লেগে ছিল। দুপুরে তৃণমূলের মোটরবাইক বাহিনী নেতাজি হিন্দি হাইস্কুলের সামনে বাম-কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জখম হন তিন জন। বিশ্বনাথবাবু তার পর থেকে রয়ে যান ওই এলাকাতেই। ভিতরের বুথে ঢুকে পরিস্থিতির খোঁজ নেন। বিকাল ৪টে নাগাদ তাঁকে দেখা গেল সারদাপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে।
দিনের শেষে কংগ্রেস প্রার্থী বলছেন, ‘‘সন্ত্রাস তৈরির খুব চেষ্টা হয়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ প্রতিরোধ করেছেন। অনেক জায়গায় করা যায়নি।’’ আর অপূর্ববাবুর বক্তব্য, ‘‘নানা মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। মানুষ সে সব গুরুত্ব দেননি। কংগ্রেস প্রার্থীর সব প্ররোচনা উড়িয়ে ঢেলে ভোট দিয়েছেন।’’