সকালে মোদীর ফোন, বিকেলেই অমিতের ডাক, এনডিএ-তে স্বাগত

সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা-ফোন আর বিকালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনডিএ-তে সাদর আমন্ত্রণ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের! দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনডিএ-তে আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ১৮:২৭
Share:

সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা-ফোন আর বিকালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনডিএ-তে সাদর আমন্ত্রণ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের!

Advertisement

দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনডিএ-তে আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত। মমতার বিপুল জয়ের দিনে এই আহ্বান জানালেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

আজ সকাল থেকে দিল্লিতে বসে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের উপরে নজর রাখছিলেন। ছবিটি স্পষ্ট হতেই মমতাকে ফোন করে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী, অরুণ জেটলিরা। তার কিছু ক্ষণ পরে সাংবাদিক সম্মেলনে সনিয়া গাঁধীর প্রতি মমতার তিক্ততা আর তুলনামূলক ভাবে বিজেপির প্রতি নরম মনোভাব নজর এড়ায়নি বিজেপি নেতৃত্বের। বিকালে দিল্লির অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে যখন অমিত শাহকে প্রশ্ন করা হয়, তা হলে কি ভবিষ্যতে মমতাকে এনডিএ-তে স্বাগত জানাবে বিজেপি? তার জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়েছি। দেশের উন্নয়নের জন্য যাঁরা সঙ্গে আসতে চান, তাঁদের সকলকে স্বাগত।’’

Advertisement

বিজেপি সূত্রের মতে, এনডিএ-তে স্বাগত জানালেই যে মমতা এখনই চলে আসছেন, এমন নয়। কিন্তু বিজেপি সভাপতি সুকৌশলে এই বার্তাটি তাঁকে দিয়ে রাখলেন মূলত চারটি কারণে। এক, এই নির্বাচনকে ঘিরে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে যে একটি তিক্ততা তৈরি হয়েছে, সেটি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে, এমন নয়। তবুও আজ বিজেপি সভাপতি যে দুই অ-বিজেপি নেতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তাঁরা হলেন জয়ললিতা ও মমতা। জয়ললিতা এনডিএ-র শরিক না হলেও তাঁকে বিজেপির বন্ধু দল হিসেবেই গণ্য করা হয়। ঠিক সেই ভাবেই মমতার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলেন অমিত শাহ। কেরলে জেতার জন্য বামেদের অভিনন্দন না জানানোর পিছনে অমিতের যুক্তি, তারা হিংসার আশ্রয় নিয়েছে। ঘটনাচক্রে মমতার রাজনৈতিক শত্রু বামেদের উপেক্ষা করে তৃণমূল নেত্রীকেও বার্তা দিলেন বিজেপি সভাপতি।

দুই, মোদীর এই জমানায় রাজ্যসভার কাঁটা দূর হওয়ার নয়। আজও অমিত শাহ তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে বার বার কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘সংসদে মোদীর উন্নয়নের রথের চাকা থামিয়ে দিয়ে কংগ্রেস নেতিবাচক রাজনীতি করতে চাইছে। আজকের ফলাফলে মানুষ তাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।’’ এই পরিস্থিতিতে মমতার মতো একটি দলকে যদি বিজেপি পাশে পেতে পারে, পরের লোকসভা নির্বাচনের আগে তাতে লাভ বিজেপিরই।

তিন, কংগ্রেস লাগাতার দুর্বল হতেই নীতীশ কুমারের মতো নেতা মোদী-বিরোধী জোটের মুখ হয়ে উঠতে চাইছেন। এখন মমতা-জয়ললিতার জয়ের পর তাঁরা যাতে এই মোদী-বিরোধী জোটে সামিল হয়ে না যান, তার জন্য আগেভাগে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি।

চার, এ বারের ভোটে বিজেপি গোবলয়ের বাইরে গিয়ে নিজেদের ছাপ রাখতে সমর্থ হয়েছে। গোবলয়ের রাজ্যগুলির বাইরে যদি বিজেপিকে এ বারে প্রসারিত করতে হয়, তা হলে আরও সঙ্গীর হাত ধরতে হবে। যার ফলে লোকসভার পরেও বিজেপির ‘একলা চলো’ নিয়ে যে ঔদ্ধত্য ছিল, সেখান থেকে সরে এসে এখন বার বার এনডিএর কথাই উচ্চারণ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আজ তাই অমিত শাহ বলেন, ‘‘শরিকদের নিয়েই অসমে আমরা সরকার গড়ব। আর পরের লোকসভা নির্বাচনেও আমরা এনডিএর শরিকদের নিয়েই ভোটে যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement