ভাস্কর ভট্টাচার্য।
বিজেপি-র তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রার্থিতালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। তার মধ্যে সামনের সারিতে রয়েছে হুগলি। রবিবার সন্ধ্যা থেকেই এই জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছেন সুবীর নাগ, রাজকমল পাঠকের মতো নেতারা। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল ভাস্কর ভট্টাচার্যর নাম। তিনি বিজেপি-র হুগলির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। টিকিট না পেয়ে এই প্রথম বিজেপি-র কোনও রাজ্য কমিটির সদস্য দল ছাড়লেন।
ভাস্কর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, হুগলি জেলার চাঁপদানি কিংবা শ্রীরামপুরে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দল তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি। শ্রীরামপুরে বিজেপি প্রার্থী করেছে কবীরশঙ্কর বসুকে। অন্যদিকে চাঁপদানিতে প্রার্থী করা হয়েছে দিলীপ সিংহকে। তাঁদের অভিযোগ, দল যাঁদের টিকিট দিয়েছে তাঁরা ধারে ভারে ভাস্করের থেকে অনেকটাই কম। গত ২১ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে দল করেছেন তিনি। কিন্তু দল তাঁকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি। তাই অপমানে দল ছেড়েছেন তিনি।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি লিখে নিজের ইস্তফার কথা জানিয়েছেন ভাস্কর। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, “২১ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। এবার আমার শেষ সুযোগ ছিল শ্রীরামপুর বা চাঁপদানি থেকে লড়ার। যাঁদের টিকিট দেওয়া হল যোগ্যতার নিরিখে তাঁদের থেকে কোনও অংশে আমি কম ছিলাম না। অথচ আমার দল আমাকে অযোগ্য বিবেচনা করে আমার দীর্ঘদিনের বিশ্বাসকে টলিয়ে দিল। এরপর দলের কাছে আর কিছু আশা করা নিরর্থক। আমি আমার সমস্ত দায়িত্ব থেকে নিজেকে মুক্ত করলাম। এই পত্র আমার ইস্তফা হিসেবে গ্রহণ করে বাধিত করবেন।”
ভাস্করের ইস্তফার বিষয়ে অবশ্য বিজেপি নেতৃত্বের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
বিজেপি-র প্রার্থী ঘোষণা হতেই হুগলি জেলায় অশান্তির আগুন ছড়ায়। হুগলি জেলা বিজেপি অফিসে ভাঙচুর, রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তাল হয় জেলা। উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া, চন্দননগর, সিঙ্গুর, হরিপাল, তারকেশ্বর ছবিটা সব জায়গায় একই। সপ্তগ্রামে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়েও ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে। প্রার্থী হতে না পেরে দল ছেড়েছেন হুগলির বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি সুবীর নাগ। টিকিট না পেয়ে আর এক বিজেপি নেতা রাজকমল পাঠক ফেসবুকে পোস্ট করে বলেন, “৩০ বছর হল বিজেপি পার্টিটা নিষ্ঠার সঙ্গে করছি। বর্তমান পরিস্থিতি বলছে এ বার অবসর নেওয়া উচিত।” সেই পথেই পা বাড়ালেন ভাস্করও।