যোগী আদিত্যনাথ। ছবি পিটিআই।
ভোটপ্রচারে বাংলায় এসে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ করেন উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। একই সঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের তুলনাও টেনেছেন। তৃণমূলের সঙ্গে একই বন্ধনীতে রেখে কংগ্রেস এবং সিপিএমকেও আক্রমণ করেছেন যোগী। উল্লেখ্য, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের পর প্রথম পশ্চিমবঙ্গে এলেন তিনি।
মঙ্গলবার বাংলায় তিনটি সভা ছিল যোগীর। প্রথমেই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নির্মলকুমার সাহার সমর্থনে প্রচার সারেন। তার পর সেখান থেকে বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের সমর্থনে সভা করেন সিউড়িতে। দু’জায়গা থেকেই রামনবমীকে কেন্দ্র করে ঘটা অশান্তি নিয়ে বাংলার শাসকদলকে আক্রমণ করেন যোগী।
রামনবমীতে এ রাজ্যে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তির ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। শুধু রামনবমী নয়, এ রাজ্যে নানা সময় ঘটা অশান্তির অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন যোগী। উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে তুলনা টেনে যোগী মন্তব্য করেন, এই ঘটনা যদি তাঁর রাজ্যে হত, তবে অভিযুক্তদের উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হত। এমন ব্যবস্থা করা হত যাতে অভিযুক্তেরা অশান্তি করার কথা ভুলে যেত। তাঁর প্রশ্ন, “বাংলায় কেন অশান্তি হয়? সরকার উত্তর দিক।” অনেকেই যোগীর এই মন্তব্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। শাহও বাংলায় প্রচারে এসে ‘উল্টো করে ঝুলিয়ে’ সাজার কথা বলেছিলেন।
মঙ্গলবার যোগী এ-ও দাবি করেন, ‘‘সোনার বাংলাকে ভ্রষ্টাচারের বাংলা করে শোষণ করেছে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল। মা দুর্গার শক্তির মাটিতে বিক্ষোভকারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয় ৷ কংগ্রেস ও কমিউনিস্টরা পিছিয়ে পড়া মানুষের সঙ্গে মুসলিমদের সংরক্ষণ দিতে চায়। বিজেপি বার বার তার বিরোধিতা করেছে। এই বাংলা বিরোধিতা করবে তো?’’ যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘সুরক্ষিত বাংলা চাইলে বিজেপির বিকল্প নেই। উত্তরপ্রদেশে শুধু রামমন্দির আছে তা নয়, মাফিয়াদের রাম নাম সত্য করে দেওয়া হয়েছে।’’
যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্য প্রসঙ্গে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের মধ্য দিয়ে বিজেপি, তৃণমূল চাইছে ভোটের মেরুকরণ হোক। মুর্শিদাবাদের সম্প্রীতির পরিবেশ কাউকে নষ্ট করতে দেব না।’’ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূলও। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘বিজেপির একটাই উদ্দেশ্য, অশান্তি সৃষ্টি করা। অশান্তির নামে কিছু মানুষকে খেপিয়ে দিয়ে ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করা। কিন্তু এই পরিকল্পনা সফল হবে না।’’