কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
তিনি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। সেই দায়িত্বে থাকাকালীন গুরুত্বপূর্ণ একাধিক মামলায় তাঁর রায় সাড়া ফেলেছে বার-বার। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে তমলুক লোকসভার প্রার্থী হওয়া সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ভোট প্রচারে বেরোনোর পর তাঁর কাছেই স্বামীর খুনের বিচার চাইলেন রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ বাকচা এলাকায় বিজেপির নিহত বুথ সভাপতি বিজয় ভূঁইয়ার স্ত্রী লক্ষ্মীরানি ভূঁইয়া।
গত বছর পয়লা মে খুন হয়েছিলেন গোড়ামহল গ্রামের বিজয় ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম ভোট প্রচারে বেরিয়ে সেই বিজয় ভূঁইয়ার বাড়িতে যান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রচারের শুরুর দিন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পেয়েছেন অভিজিৎ। ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা নিয়েই ময়নায় ভোট প্রচারে বেরিয়ে গোড়ামহল গ্রামে নিহত বিজয় ভূঁইয়ার বাড়ি যান তিনি। কুঁড়ে ঘরে বসে প্রাক্তন বিচারপতির কাছেই স্বামীর খুনের বিচার চান লক্ষ্মীরানি ভূঁইয়া।
লক্ষ্মীরানি অভিযোগ করেন, ‘‘খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমার স্বামীকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।’’ প্রাক্তন বিচারপতি তাঁর কাছে জানতে চান, অভিযুক্তদের বাড়ি কোথায়। কী ভাবে বিজয়কে খুন করা হয়েছিল, সেই বিবরণও শোনেন।
লক্ষ্মীরানি তাঁকে বলেন, "আপনার কাছে আমার আর্জি, দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন।" তাঁকে আশ্বাস দিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আপনাদের পাশে আছি। দেখছি কী করা যায়।’’ লক্ষ্মীরানির পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থা দূর করতে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন অভিজিৎ। বাড়ির সামনে রাখা বিজয় ভূঁইয়ার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন তিনি।
এ দিন বিকেলে বিজয় ভূঁইয়ার বাড়ি যাওয়ার আগে ময়নার হোগলাবাড়িতে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে কর্মিসভায় যোগ দেন। সেখানে ছিলেন ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্ডা, দলের লোকসভা ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুপম মল্লিক, জেলাপরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত, দলের জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল-সহ
ব্লক নেতৃত্ব।
বিজয় ভূঁইয়ার বাড়ি যাওয়ার পথে গোজিনা, বাকচার বিভিন্ন জায়গায় দলের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। বিজয় ভূঁইয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে খিদিরপুর প্রাথমিক স্কুলের মাঠে দলের কর্মী -সমর্থক ও এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে তিনি জনসংযোগ সারেন। খিদিরপুরের পরে গোজিনার পায়রাচকে কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে লোকসভা ভোটে ৪০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে থাকার সম্ভাবনার কথা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন।