দুধকুমার মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
বীরভূম লোকসভা আসনে দলের প্রার্থী কে, আপাতত এই জল্পনা চলছে বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলার অন্দরে। দলের একাংশের প্রশ্ন, গত বারের মতো এ বারও কি দুধকুমার মণ্ডলের উপরেই ভরসা রাখবে দল, নাকি নতুন মুখ আনা হবে। দলের নেতাকর্মীদের একাংশ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারেরা দিল্লিতে রয়েছেন। প্রার্থী তালিকা জানতে মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে, দৌড়ে অনেকের মধ্যে এগিয়ে দুধকুমারই।
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই এ রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০টিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। ওই তালিকায় আছেন বোলপুর লোকসভা আসনে মনোনীত প্রার্থী পিয়া সাহা। তিনি জোরকদমে প্রচার শুরু করেছেন। ৪২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূলও। দু’টি লোকসভা আসনে প্রচার শুরু করেছেন শতাব্দী রায় ও অসিত মাল। বীরভূম আসনে দেওয়াল দখলেও অনেক এগিয়ে গিয়েছে শাসকদল। এই অবস্থায় বিজেপি কর্মীদের মনে প্রার্থিপদ নিয়ে জল্পনা অব্যাহত।
দল সূত্রে খবর, একাধিক নাম চর্চায়। বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, একাধিক প্রাক্তন সভাপতি, এর আগে নির্বাচনে লড়া (লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন) প্রার্থী, জেলার বাসিন্দা তথা দলের রাজ্য নেতা থেকে দুবরাজপুরের বিধায়ক। ঘুরে ফিরে আসছে প্রবীণ নেতা দুধকুমার মণ্ডলের নামও। দলের নেতাকর্মীদের কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘‘হতেই পারে চর্চার বাইরে চমকে দেওয়ার মতো কোনও নাম সামনে এল। তবে, এখনও পর্যন্ত যা খবর, নেতৃত্বের পছন্দে তালিকায় দুধকুমারদার নাম রয়েছে।’’
দুধকুমার নিজেও প্রত্যয়ী। তাঁর কথায়, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে যে লড়াই আমি দিয়েছিলাম, তাতে প্রার্থী হিসাবে আমার নাম উপরের দিকে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাকিটা দলের সিদ্ধান্ত। আমি জানার চেষ্টাও করিনি। এটুকু বলব, এই আসনে বিজেপি জিতবে।’’ অন্য দিকে, দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘বিজেপি সর্বভারতীয় দল। আমরা নিচুতলার কর্মী। দল যাঁকে প্রার্থী করবে, তাঁর হয়ে লড়াই করব।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা ও রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন পদাধিকারীদের অনেকেই প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। শুধু বায়োডেটা নয়, একাধিক সমীক্ষা হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে। সমীক্ষার ভিত্তিতেই দুধকুমরারের নাম ভাসছে বলে খবর। যে-ভাবে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হয়েছিল। দলেরই একটি সূত্র বলছে, এ বারও দুধকুমারকে ‘উপযুক্ত’ বলে মনে করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এমনিতে জেলা বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে দুধকুমারের সম্পর্ক বিশেষ ‘মসৃণ’ নয় বলেই দলের ভিতরে চর্চা। তবে, দীর্ঘদিনের কর্মী হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও দুধকুমারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রবল মোদী হওয়ায় শাসকদলের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হলেও জয় বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ২ লক্ষ ২৫ হাজারের কিছু বেশি ভোট। বিজেপি তৃতীয় স্থানে ছিল। পাঁচ বছর পরে দুধকুমার ৫ লক্ষ ৬৫ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন। এই পরিসংখ্যানও দুধকুমারের পক্ষে যাচ্ছে। তবে, তিন বারের সাংসদ এবং এ বারেও তৃণমূলের প্রার্থী শতাব্দী রায় বলেছেন, আগে বিপক্ষের প্রার্থীর নাম সামনে আসুক। তার পরে প্রতিক্রিয়া দেবেন।