Lok Sabha Election 2024

বাজপেয়ীর চ্যালেঞ্জ মোদীর, ‘বিগ ফোর’ মন্ত্রকের দাবি নিয়ে শরিকদলের সঙ্গে সমঝোতা করা যাবে তো!

সপ্তাহান্তে শপথগ্রহণ নরেন্দ্র মোদীর। তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন তিনি। তবে অতীতের দু’বারের থেকে অনেক কঠিন তৃতীয় মন্ত্রিসভা গঠন। দুই প্রধান শরিকের ‘চাপ’ মানার বাধ্যবাধকতা আছে মোদীর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪ ২১:০৫
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

তৃতীয় মন্ত্রিসভা তো সাজাবেন। কিন্তু শরিকরা কী চাইবে? বিশেষত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ‘বিগ ফোর’ বলে খ্যাত চার মন্ত্রকের কোনটি বা কোন কোনটি শরিকদলকে দিতে হবে? আপাতত তা নিয়েই কাটাছেঁড়া চলছে নরেন্দ্র মোদীর চারপাশে।

Advertisement

একটি সূত্রের দাবি, শপথের সময়ে তুলনায় ছোট মন্ত্রিসভাই গড়তে পারেন তিনি। কিন্তু তাতেও বড় শরিকদের খুশি করতেই হবে তাঁকে। সেই ‘নির্ভরতা’র জেরে তাঁকে প্রধান চার গুরুত্বপূর্ণ দফতরের একটি বা একাধিক অন্য দলের হাতে ছেড়ে দিতে হতে পারে। মোদীর দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় ৭২ জন সদস্য ছিলেন। তার মধ্যে ২৭ জন পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন বিজেপির। ‘স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত’ তিন প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন বিজেপির। বাকি প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যেও ৪০ জন ছিলেন বিজেপির। বাকি দু’জন আপনা দল এবং রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়ার। প্রধান চারটি মন্ত্রক স্বরাষ্ট্র, অর্থ, প্রতিরক্ষা এবং রেল নিজের দলের প্রধান নেতাদেরই দিয়েছিলেন মোদী।

অতীতে রেলের আলাদা বাজেট হওয়ায় জোট সরকারে শরিকরা সবসময়ে রেল মন্ত্রকের দাবি জানাতেন। সেই শর্তেই একাধিক বার রেলমন্ত্রী হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব, রামবিলাস পাসোয়ানরা শরিক দলের প্রতিনিধি হিসাবে রেলমন্ত্রী হয়েছেন। প্রতিরক্ষা এবং অর্থমন্ত্রকও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রথমটিতে অনেক বেশি বরাদ্দ থাকায় কাজের সুবিধা হয় আর দ্বিতীয়টির হাতে থাকে অর্থবণ্টনের সুযোগ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মানে অনেক ক্ষমতা। সাধারণত জোটের বড় শরিকই ওই দফতর হাতে রাখে। কিন্তু এ বার শরিকি ‘বাধ্যবাধকতা’র মধ্যে অমিত শাহ কি মোদীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকতে পারবেন? সেই প্রশ্নও বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। ‘ক্ষয়িষ্ণু’ বিজেপির কাছে দলের দু’নম্বরকে নিয়ে চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজধানীতে জল্পনা, তেলুগু দেশম স্বরাষ্ট্র বা অর্থের মতো দফতর চাইতে পারে। আবার নীতীশ চেয়ে বসতে পারেন রেল বা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। মোদী কী করে সেই চাহিদা সামলান, সেটাই দেখার।

Advertisement

অনেকের মনে হচ্ছে, মোদীর বিজেপি ২৫ বছর আগের সেই বিজেপির মতো। যখন ১৯৯৯ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁর তৃতীয় সরকার গড়েছিলেন।

সে বারই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পেরেছিল বাজপেয়ী সরকার। তখন বিজেপির হাতে ছিল ১৮২টি আসন। এনডিএ-র সঙ্গী ছিল আটটি দল। জোটের সাংসদ ছিলেন ২৯৯ জন। এ বার বিজেপির হাতে ২৪০ আসন। সঙ্গী দল ৪০টি। জোটের শক্তি ২৯৩। অনেক সঙ্গী আগের মতোই রয়েছেন। আবার অনেকে নেই। কিন্তু সবচেয়ে বেশি বিজেপির নির্ভরতা নীতীশ কুমার আর চন্দ্রবাবু নাইডুর উপরে। তাঁদের দল যথাক্রমে ১২টি এবং ১৬টি আসনে জিতেছে।

ইতিমধ্যেই মোদী, শাহ-সহ বিজেপির শীর্ষনেতারা বৈঠক করেছেন নীতীশ এবং চন্দ্রবাবুর সঙ্গে। সেই বৈঠকে দুই নেতাই চার গুরুত্বপূর্ণ দফতর নিয়ে দাবি জানিয়েছেন বলেই একাধিক সূত্রের দাবি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার দিল্লির বাড়িতে ওই বৈঠকে মন্ত্রকবণ্টন নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, শাহকে সরিয়ে তাঁদের দলের কাউকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হোক বলে দাবি জানিয়ে রেখেছেন চন্দ্রবাবু। সেই সঙ্গে লোকসভায় স্পিকার পদেরও দাবিদার টিডিপি। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কোনও সমর্থন মেলেনি। ওই সূত্রেই দাবি, কৃষি ও শিল্পের মতো দফতর চান নীতীশ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়ার দল জেডিএস-ও কৃষিমন্ত্রকের দাবিদার। ফলে বৃহত্তম শরিক হলেও ‘যাদুসংখ্যা’ ছুঁতে না পারায় বিজেপি ‘চাপে’। সপ্তাহান্তে মোদীর শপথগ্রহণ। কিন্তু তার আগেও খুব ‘স্বস্তিতে’ নেই ‘মোদী পরিবার’-এর সদস্যেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement