আদিবাসী এলাকাতেও চোখে পড়ছে ভোটের দেওয়াল লিখন। মহম্মদবাজারের টাংশুলি আদিবাসী গ্রামে। ছবি: পাপাই বাগদি।
বোলপুর-শান্তিনিকেতন ও মহম্মদবাজারের পাঁচামি এলাকার অধিকাংশ আদিবাসী গ্রামেই আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষায় দেওয়াল লিখনে অনুমতি দেওয়া হয় না কোন রাজনৈতিক দলকেই। গ্রামের আদিবাসীদের বাড়ির দেওয়াল সেজে ওঠে আদিবাসী শিল্পকলা দিয়েই। কিন্তু এ বার অন্য চিত্র দেখা যাচ্ছে মহম্মদবাজার ব্লকের চরিচা পঞ্চায়েতের টাংশুলি গ্রামে। বেশ কিছু বাড়ির দেওয়ালে দেখা যাচ্ছে শাসকদলের দেওয়াল লিখন।
এলাকার আদিবাসীদের একাংশের দাবি, আদিবাসীদের একাংশ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। তাই তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে ভোটের প্রচার চোখে পড়ছে। জোর করে দেওয়াল লেখার অভিযোগ নেই। যাঁরা অনুমতি দিচ্ছেন, তাঁদের দেওয়ালই লেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অন্য জায়গার পাশাপাশি এখানেও ২০১০ সাল থেকে দেওয়াল লিখতে না দেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছিল। গত নির্বাচন পর্যন্ত আদিবাসী এলাকায় দেওয়াল লিখন চোখে পড়েনি। এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা জহর হেমব্রম ও সুকুমার কিস্কু বলেন, ‘‘যাঁরা রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের দেওয়ালেই এই দেওয়াল লিখন দেখা যাচ্ছে। তবে অন্য আদিবাসীরা দেওয়াল লিখতে দিচ্ছেন না।’’
আদিবাসী নেতা রবিন সরেন বলেন, ‘‘আমরা ২০১০ সাল থেকে পাঁচামি-সহ এই ব্লকের সমস্ত আদিবাসী এলাকায় আদিবাসী সংস্কৃতিকে বাঁচাতে দেওয়াল লিখনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। কিন্তু কেউ কেউ বর্তমানে রাজনীতিতে নেমে তাঁদের নিজেদের দেওয়ালে লিখছেন।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য মাধবী বাগদি বলেন, ‘‘আমরাও চাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি বেঁচে থাকুক। তাই আমরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করছি। দেওয়াল লিখিনি।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সন্তোষ ভান্ডারি বলেন, ‘‘আমরা দেওয়াল লিখতে গিয়ে বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে বাধার মুখে পড়েছি। আমরাও চাই তাদের সংস্কৃতি বেঁচে থাকুক। তাই তাঁদের সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে লিখিনি। শাসক দল আদিবাসীদের ভয় দেখিয়ে দেওয়াল লিখছে।’’
জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি স্বর্ণলতা সরেন বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আদিবাসী এলাকায় দেওয়ার লিখন না করার বার্তা দিয়েছি। কিন্তু আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিছু যুবক বর্তমানে রাজনীতির প্রথম সারিতে রয়েছেন। তাঁরাই তাঁদের নিজেদের দেওয়ালে লিখছেন।’’