(বাঁ দিকে) দীপ্সিতা ধর। (ডান দিকে) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
এক দিক থেকে আসছে তৃণমূলের মিছিল। নেতৃত্বে শ্রীরামপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে থেকে এগিয়ে এল বাম প্রার্থী দীপ্সিতা ধরের নেতৃত্বে মিছিল। দুই দলের মিছিল সামনাসামনি হতেই একে অপরের উদ্দেশে শুরু হল স্লোগান এবং পাল্টা স্লোগান। গলার জোর বাড়ালেন দুই দলের কর্মী এবং সমর্থকেরা। তবে সামনে গিয়েও মুখোমুখি হলেন না কল্যাণ এবং দীপ্সিতা। বরং পরে একে অন্যকে বিঁধলেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। কল্যাণ আবার স্লোগান দিতে দিতে গলা ছেড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতও গাইলেন। বুধবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর সকালে এমনই ঘটনা ঘটল শ্রীরামপুরের পেয়ারাপুর মুসলমান পাড়ায়।
বড় বেলু থেকে প্রচারে শুরু করেছিলেন সিপিএমের প্রার্থী দীপ্সিতা। উল্টো দিক থেকে আসা তৃণমূলের কল্যাণের মিছিল সামনাসামনি হল মুসলমান পাড়ায় এসে। সিপিএমের মিছিল থেকে উঠল ‘তৃণমূল হটাও’ ধ্বনি। পাল্টা ‘সিপিএম হটাও’ স্লোগান শুরু করে তৃণমূল। কল্যাণও রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। যখন দেখলেন, পরিস্থিতি হাতের বাইরে যেতে পারে, কল্যাণ তখন নিজেই দলীয় কর্মীদের এক দিকে সরিয়ে দীপ্সিতার মিছিলকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেন। স্লোগান অবশ্য থামেনি। আবার মুখোমুখি না-হলেও একে অন্যকে খোঁচা দিলেন কল্যাণ এবং দীপ্সিতা। কল্যাণ বলেন, ‘‘উনি তো মিস ইউনিভার্স। নিজেকে সোফিয়া লোরেন ভাবছেন।’’ সেটা শুনে আবার কল্যাণকে দীপ্সিতার পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘মিস্টার ইন্ডিয়া ঘড়িটা হয়তো পরে আছেন। তাই দেখতেই পেলাম না ওঁকে। উনি পথে নেমেছেন। চার তারিখ (ভোটের ফল) হারার পর ওঁকে পথেই থাকতে হবে।’’ যা নিয়ে আবার কল্যাণ বললেন, ‘‘ও নিজেকে সোফিয়া লোরেন ভাবা শুরু করেছে। সবাই তো দেখতে পাচ্ছে!’’ কল্যাণের সংযোজন, ‘‘ও এই রকম ভাবেই চালিয়ে যাবে। আর আমাকেও বলে যেতে হবে।’’
আশির দশকের গোড়া থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত শ্রীরামপুর লোকসভা থেকে কোনও রাজনৈতিক দলই দু’বারের বেশি জিততে পারেনি। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল, টানা তিন বার জিতে সেই নজির ভেঙে দেন কল্যাণ। এ বার লোকসভা ভোটে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের দীপ্সিতা এবং বিজেপির কবীরশঙ্কর বসু।