মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
গ্রামের মানুষের সঙ্গে ‘জমিদার’-এর দূরত্ব এখনও প্রাসঙ্গিক? কিংবা ‘বিরোধীদের বিসর্জন’-এর ভাবনা কতটা গণতান্ত্রিক?
এ বারের লোকসভা ভোটে দলের ‘স্লোগান’ কতটা ফলপ্রসূ হবে, সে দিকে তাকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পরামর্শদাতা সংস্থা। একই ভাবে তাদের তৈরি স্লোগান ‘তৃণমূলের গর্জন ‘বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জন’-এরও পরীক্ষা হবে নির্বাচনে। আগে ‘দিদি’কে রেখে স্লোগান বাঁধা হলেও এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপিকে বেঁধার কৌশল নিয়েছে তারা।
এ রাজ্যের নির্বাচনে স্লোগান তৈরি ও তার ব্যবহারের ঐতিহ্য কয়েক দশকের। সামাজিক বিষয়কে রাজনীতিতে ব্যবহারের লক্ষ্যে এ বার ‘জমিদার’ শব্দটি বিশেষ ভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছে তৃণমূল। মূলত ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস প্রকল্পে প্রাপ্য নিয়ে কেন্দ্রকে ‘জমিদার’-এর সঙ্গে এক আসনে বসাতে চেয়েছে তারা। ‘জমিদার’-এর বঞ্চনার সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাদের তোলা বঞ্চনার অভিযোগ মিলিয়ে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা। তাদের মতে, ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত গ্রামের মানুষের কাছে ‘জমিদার’ সম্পর্কে যে ভাবনা, তা-ই কাজে লাগানো হচ্ছে।
ছন্দ মিলিয়ে ‘গর্জন’ আর ‘বিসর্জন’-এ বাঁধা অন্য স্লোগানের দিকেও তাকিয়ে তৃণমূল। মাস দেড়েক আগে ব্রিগেডের জনসভার মঞ্চকে ওই স্লোগানেই প্রচারে এনেছিল তারা। পরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক সভায় এই স্লোগান দেওয়ায় তা নেতাকর্মীদের মুখে চলে এসেছে।
কিন্তু ‘বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জন’ – এর মতো স্লোগানে খানিকটা ঝুঁকি আছেও বলেও মানে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা। সংস্থারই এক জনের কথায়, ‘‘বিসর্জন’ শব্দটিতে কিছুটা ঔদ্ধত্য হয়তো আছে। তবে নির্বাচনে মানুষের ঔদ্ধত্য থাকবেই। তাঁরাই তো শেষ কথা।’’
এ রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ শুরুর পরে দু’টি নির্বাচনে দু’টি স্লোগান এনেছিল ওই পরামর্শদাতা সংস্থা। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে ‘দিদিকে বলো’ স্লোগান সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে তৃণমূলকে। ফলের নিরিখে ২০২১ সালে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগানও কাজ করেছে। এ বার তাদের স্লোগান বিরোধীদের নিশানা করে ।