তফসিলির সংলাপ অনুষ্ঠানে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে। — নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু করতেই তার পাল্টা কর্মসূচি নিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল।
লোকসভা ভোটের মুখে সিএএ চালু করে কেন্দ্রীয় শাসকদল বাংলার মতুয়া এবং উদ্বাস্তু ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব খাটাতে চাইছে বলে মনে করছে তৃণমূল। মঙ্গলবার দুপুরে তারা কর্মসূচি নিল বাংলার সমস্ত তফসিলি জাতি এবং উপজাতির মানুষের কাছাকাছি পৌঁছনোর এবং সিএএ নিয়ে তাঁদের ভুল ভাঙানোর।
এই মর্মে আগামী ১৫ মার্চ থেকে ‘তফসিলির সংলাপ’ নামে একটি প্রচারাভিযান শুরু করতে চলেছে তৃণমূল। সেই অভিযান ঘিরে কী কী পরিকল্পনা রয়েছে দলের, সে কথাই মঙ্গলবার দুপুরে একটি বিশেষ বৈঠকে জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূলের সভাপতি। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের সমস্ত তফসিলি জাতি এবং জনজাতি শ্রেণিভুক্ত তৃণমূল নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা। প্রায় সাড়ে তিন হাজার তফসিলি জাতি এবং জনজাতি নেতা-নেত্রীকে তাঁদের আগামী দিনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিষেক।
নজরুল মঞ্চে ডাকা অভিষেকের ওই তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সম্মেলনে ঠিক হয়েছে, আগামী শুক্রবার, ১৫ মার্চ থেকে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের দেড়শোটি বিশেষ বার্তাবাহী প্রচার গাড়িতে ছ’হাজারেরও বেশি এলাকা পরিদর্শন করবেন তৃণমূলের তফসিলি নেতা-নেত্রীরা। চালাবেন বিশেষ প্রচার অভিযান।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ১৫ মার্চ থেকে মূলত তৃণমূল নেতা-নেত্রী এবং জনপ্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট বার্তাবাহী প্রচার গাড়িতে চেপে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যাবেন। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের কথা শুনবেন এবং একই সঙ্গে একটি বিশেষ বইও বিতরণ করবেন তাঁদের।
ওই বইয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা থাকবে, ভারত জুড়ে সমস্ত তফসিলি জাতি এবং জনজাতির মানুষের প্রতি বিজেপির নেতিবাচক দিকগুলি কী কী। তার পাশাপাশিই তুলনা করা হবে বাংলায় তৃণমূল কী ভাবে এই সম্প্রদায়ের মানুষজনকে রক্ষা করে চলেছে।
প্রতিটি এলাকায় অন্তত ৩৫টি ‘হটস্পট’ তৈরি করে সেখানে তৃণমূল নেতৃত্ব আলোচনা সভার আয়োজন করবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। পাশাপাশিই তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক তাঁর সাড়ে ৩ হাজার ‘সেনাবাহিনী’কে বলেছেন, এই সভায় তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের কাছে সিএএ-র কার্যকরণ ব্যাখ্যা করতে হবে। যাতে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যা বোঝাতে চাইছেন, তা নিয়ে কোনও ভুল ধারণা না থাকে।
শুক্রবার এই ‘তফসিলি সংলাপ’ প্রচার শুরুর আগে তৃণমূলের তফসিলি নেতা-নেত্রী এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে আর মাত্র দু’দিন সময় রয়েছে। তাই তৃণমূল সেনাপতি দ্রুততার সঙ্গে কাজে নামতে বলেছেন তৃণমূলের এই প্রচারের ভারপ্রাপ্ত নেতা-নেত্রীদের।