Lok Sabha Election 2024

দলের সব কর্মীকে পাশে পাবেন তো কল্যাণ? প্রশ্ন

গত নির্বাচনে শহরাঞ্চলে কিছুটা বেগ পেলেও (রিষড়া পুরসভায় এগিয়েছিল বিজেপি) গ্রামীণ জনপদে ছুটেছে কল্যাণের জয়রথ।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়  , প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৯
Share:

শ্রীরামপুর ‘জোড়াফুল’ প্রতীকে লড়বেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

তাঁর টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল দলের একাংশেরই। তৃণমূলের রবিবারের ব্রিগেড অবশ্য জানিয়ে দিল, লোকসভা ভোটে চতুর্থ বারের জন্য শ্রীরামপুর ‘জোড়াফুল’ প্রতীকে লড়বেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

Advertisement

তবে, গত পাঁচ বছরে দলীয় সংগঠনের বৃত্তে কি অনেকটাই দুর্বল হয়েছে বর্ষীয়ান এই সাংসদের জমি? তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি, তাঁর আশপাশে সংগঠনের যে সব নেতারা ঘোরাফেরা করতেন, তাঁদের অনেকেই অনুপস্থিত! সঙ্গে উঠছে কল্যাণের ‘দুর্মুখ’ তকমার কথাও।

এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘বাম দলগুলির মতো আমাদের দলে কর্মীদের বেতন দেওয়ার রেওয়াজ নেই। কিন্তু সাংসদ প্রায়ই তা ভুলে যান। ছুতোনাতায় দলের কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।’’ অন্য এক নেতার বক্তব্য, ‘‘যাঁরা ওঁর জন্য ভোটে প্রাণপাত পরিশ্রম করেন, তাঁদের ভুলে যান।’’

Advertisement

গত নির্বাচনে শহরাঞ্চলে কিছুটা বেগ পেলেও (রিষড়া পুরসভায় এগিয়েছিল বিজেপি) গ্রামীণ জনপদে ছুটেছে কল্যাণের জয়রথ। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের দাবি, এই পাঁচ বছরে বিজেপির বুথভিত্তিক সংগঠন তুলনায় গোছানো। ফলে, এ বার লড়াই শক্ত।

কল্যাণ ডরাচ্ছেন না। সংগঠনের দুর্বলতার কথাও মানছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি শ্রীরামপুরের মানুষের কাছে, দলের কাছে কৃতজ্ঞ আমার উপরে ভরসা রাখায়। সংগঠনে কোনও সমস্যা নেই, ঠিকই আছে।’’

কিন্তু আপনার মেজাজ?

বিজেপির দিকে ইঙ্গিত করে দুঁদে আইনজীবীর জবাব, ‘‘দিল্লিতে যে অসভ্যদের সরকার চলছে, লোকসভায় মাঝেমধ্যে মেজাজ ঠিক থাকে না। আমি সোজাসাপটা লোক, অনেক সময় বলে ফেলি।’’

বছর দুয়েক আগে দলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ‘ব্যক্তিগত’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কল্যাণের সমালোচনার জেরে তৃণমূলের অন্দরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছিল। দলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত কল্যাণের সঙ্গে অভিষেকের সম্পর্ক নিয়েও চর্চা হয়। ওই সময় একাধিক ঘটনায় কল্যাণের সঙ্গে শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের দ্বন্দ্বও সামনে এসেছিল। সেই সময়েই এক দিনের ব্যবধানে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে সুদীপ্তকে সরিয়ে কল্যাণকে বসানো হয়। এর কারণ নিয়ে রীতিমতো আলোচনা চলে। কখনও স্কুলের সভাপতি পদে বদল নিয়ে, কখনও পার্কের উদ্বোধনে বিধায়কের নাম না থাকা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে সরগরম হয় তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি।

নিজের অভিজ্ঞতা, গরম বক্তৃতা, ভোটের ময়দানে অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে কল্যাণ কতটা কাছে টানতে পারবেন অসন্তুষ্ট কর্মীদের সবাইকে? রাগ-অভিমান ভুলে কল্যাণকে চতুর্থ বার দিল্লি পাঠানোর লড়াইতে ওই সব কর্মীদের সবাই উজাড় করবেন নিজেদের? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।

বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘উনি (কল্যাণ) শ্রীরামপুরবাসীর কথা ভাবেননি। ফলে গত ১৫ বছরে মানুষ কী পেলেন, মানুষ প্রশ্ন তুলছেন। তা ছাড়া তৃণমূলের সার্বিক দুর্নীতির বিষয়টি তো আছেই। শ্রীরামপুরে এ বার বিজেপি জিতবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement