অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের উত্তাপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রেলের একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে দু’জেলায় জুড়ল বিতর্ক। সারা দেশের সঙ্গেই সোমবার দু’জেলায় রেলের বিভিন্ন কাজের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট স্টেশনগুলিতে রেল মঞ্চ বেঁধে অনুষ্ঠান করলেও সেখানে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের ‘ডাক না পাওয়া’ ও অনুষ্ঠানে ‘গরহাজির’ থাকা নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক।
রেলের দাবি, ওই অনুষ্ঠানগুলিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক-সহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের। আদ্রা, জয়চণ্ডীপাহাড়, আনাড়া, পুরুলিয়া, বরাভূম-সহ বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখীর মতো স্টেশনে ছিলেন সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, সুভাষ সরকার ও সৌমিত্র খাঁ। বিষ্ণুপুরে নবনির্মিত উড়ালপুলের ফলক উন্মোচন করে সাংসদ সৌমিত্র জানান, মল্লরাজ বীর হাম্বিরের নামে উড়ালপুলের নামকরণ করা হল।
এছাড়া রঘুনাথপুর, পাড়া, কাশীপুর, জয়পুর, বলরামপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ছাতনা, সোনামুখী, ওন্দাগ্রামে ছিলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়কেরা। ঘটনাচক্রে ওই সব সাংসদ ও বিধায়কেরা বিজেপির। কিন্তু অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি তৃণমূলের কোনও জনপ্রতিনিধিকে।
জয়চণ্ডীপাহাড় স্টেশন রঘুনাথপুর শহরের প্রান্তে। রঘুনাথপুরের তৃণমূলের পুরপ্রধান তরণী বাউরির দাবি, তাকে রেল আমন্ত্রণ জানায়নি। আবার পুরুলিয়ার তৃণমূলের পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালির দাবি, ‘‘রেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ পত্র দিয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ওই অনুষ্ঠান বিজেপির দলীয় কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে দেখে আর সেখানে যাইনি।’’ গেরুয়া রঙের কাপড়ে মোড়া প্যান্ডেল, বিজেপি নেতাদের অনুষ্ঠান পরিচালনা করা নিয়েও তিনি কটাক্ষ করেন।
বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোরও দাবি, ‘‘সে ভাবে রেলের তরফ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রেল আমন্ত্রণ পত্রও পাঠায়নি।’’ বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের দাবি, “আমি আমন্ত্রণ পাইনি, অনুষ্ঠানেও যাইনি।’’
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের পাল্টা দাবি, “অনুষ্ঠানটিই রেলের। ফলে কাদের ডাকা হয়েছিল আমার জানার কথা নয়।” রেলের অবশ্য দাবি, যে সমস্ত স্টেশনে অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্য সরকারই বরং কোনও অনুষ্ঠান বা সভায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের ডাকে না। রেল রাজনৈতিক রং না বিচার করে সবাইকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা অনুপস্থিত থেকে নিজেদের রূপ চেনালেন।’’
তবে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘অনেক আগে চালু হওয়া কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। আর যেগুলির শিলান্যাস হল, সেগুলির কাজ
আদৌও হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।তাই আমাদের জনপ্রতিনিধিরা সেখানে যাওয়া সমীচিন মনে করেননি।’’