মমতা বালা ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর হয়ে যাবে— এমনই আশ্বাস নাকি মিলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের থেকে। দাবি পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতাদের। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি কৃষ্ণনগরের সভাস্থলে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ দাবি করছেন মার্চ মাসের ৭ তারিখ থেকে সিএএ কার্যকর হয়ে যাবে। বিজেপির এমন দাবির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মতুয়া মহা সঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ আনলেন তিনি।
মমতাবালা বলেন, ‘‘মতুয়ারা সব সময় নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি করে এসেছে। সিএএ-র নাম করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মতুয়াদের গোলাম বানিয়ে রাখতে চাইছে। এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছে। বলছেন নাগরিকত্ব পেতে গেলে আগে কাগজ দেখাতে হবে, প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। যাঁরা উদ্বাস্তু হিসাবে নিজের দেশ ছেড়ে নাগরিকত্বের আশায় ভারতের এসেছিলেন। তারা কাগজপত্র নথি পাবেন কোথা থেকে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা বলছেন ৭ মার্চ থেকে সিএএ কার্যকর হয়ে যাবে। আমরা সেদিকে নজর রাখছি। যদি দেখি সিএএ-তে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের কথা বলা নেই। তা হলেই আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেবে প্রতিবাদ জানাব।’’ প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণনগরের সভায় মতুয়া গুরু হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদের নাম না করায় তাঁরা ব্যথিত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মমতাবালা।
তবে তাঁর এই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি নাগরিক কবিয়াল অসীম সরকার। বর্তমানে যিনি আবার বিজেপির হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘আমি মমতাবালা ঠাকুরকে দ্বিচারিতার রাজনীতির বন্ধ করতে অনুরোধ করব। কারণ ওঁর দলের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন যাঁদের আধার কার্ড রয়েছে ভোটার কার্ড রয়েছে তাঁরাই নাকি দেশের নাগরিক। আর তাঁরই দলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য বলছেন নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। না হলে আন্দোলনে নামবেন। তৃণমূলের এই দুই অবস্থানের মধ্যে কোনটি সঠিক অবস্থান আগে তারা ঠিক করুক।’’ এর পর তিনি বলেন, ‘‘যিনি দেশের আইন কানুন প্রসঙ্গে অবগত নন, তাঁকে তৃণমূল রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে। তেমনই একজন মানুষ যাঁর নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে ন্যূনতম ধারণা নেই, তিনি এ সব অবান্তর কথা বলছেন। আসলে সিএএ কার্যকর হলে মতুয়া সমাজের কতটা উপকার হবে, তা কেবল মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন বুঝবেন।’’