Abhishek Banerjee

পদ্ম-বিধায়ক হিরণ তৃণমূলে আসতে চাইলে ঠিক কী কী ঘটেছিল, ঘাটালে সব ফাঁস করে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

দেবের সমর্থনে ঘাটালে প্রচারে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুঁশিয়ারি দিলেন সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৮
Share:

হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায় কয়েক মাস আগেও তৃণমূলে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে দলে নেয়নি। রবিবার ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেবের (দীপক অধিকারী) সমর্থনে প্রচারে গিয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভূপতিনগরকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এনআইএ-র এসপি ধনরাম সিংহ এবং বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির ‘বৈঠক’ নিয়ে শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। তৃণমূল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তারা চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জিতেনের এনআইএ অফিসারের বাড়িতে প্রবেশের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনতে পারে। ওই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক হুঁশিয়ারি দিলেন, প্রয়োজনে আরও একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনবেন তিনি। সেটা হল হিরণের তাঁর অফিসে যাওয়ার দৃশ্য। দেবকে পাশে নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘এখানে যাঁকে বিজেপি দাঁড় করিয়েছে, সে ছ’মাস-আট মাস আগে আমার দফতরে এসেছিল।’’ অভিষেক যখন এই মন্তব্য করেন, তাঁর পাশে দাঁড়ানো দেবকে হাসতে দেখা যায়। অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূলে ঢোকার জন্য এসেছিল। আমি দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। ঢুকতে দিইনি। তারও সিসিটিভি ফুটেজ আছে। তাকেও বলব, মিথ্যা কথা বলো, কিন্তু বেশি বলতে নেই।’’

Advertisement

তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন হিরণ। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি তাঁকে খড়্গপুর থেকে প্রার্থী করে। জিতে হিরণ এখন বিধায়ক। বিজেপি তাদের অভিনেতা-বিধায়ককে এ বার ঘাটালের দু’বারের সাংসদ তথা অভিনেতা দেবের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে। অভিষেকের দাবি, কয়েক মাস আগেও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন হিরণ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কটাক্ষ, ‘‘খড়্গপুর থেকে বিধানসভা ভোটে ২০২১ সালে জয়ী হয়েছেন। চলে যান খড়্গপুরে। সেখানে ১০ পয়সার উন্নয়ন করেছেন কি না দেখে আসুন। সে দেবকে হারাবে! আমি বলব, আগে খড়্গপুর সামলাও। পরে তুমি ঘাটাল নিয়ে ভেবো।’’

২০২৩ সালের প্রথম দিকে হিরণের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার জল্পনা জোরদার হয়েছিল। তৃণমূল দাবি করে, খড়্গপুরের বিধায়ক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে যান। ওই নিয়ে যখন ‘বিতর্ক’ তুঙ্গে, তখন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি দাবি করেন, তাঁর সঙ্গেই অভিষেকের দফতরে গিয়েছিলেন খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ। তাই যে ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তা ‘১০০ শতাংশ সত্যি’ বলে দাবি করেন তিনি। অন্য দিকে, ওই বিতর্কের মধ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হিরণ। তার পর সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, তিনি বিজেপিতে ছিলেন, বিজেপিতেই থাকবেন। তাঁর যে ছবি সমাজমাধ্যমে ঘুরছে, তা বিকৃত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হিরণ। যা নিয়ে অভিষেক এক বার কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘আমার ছবি বিকৃত করলে তো আগে পুলিশের কাছে যেতাম।’’

Advertisement

দেবের সমর্থনে ভোটের প্রচারে গিয়ে এ নিয়ে আরও ঝাঁঝালো আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, ‘‘বিজেপির লোকেরাই চায় না এ রকম দু’নম্বরি লোককে, যার পায়ের নখ থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত দু’নম্বরি।’’ তৃণমূল নেতা আরও বলেন, ‘‘আমি তো ঢুকতে দিইনি। কিন্তু ও বলেছে, ‘আমি অভিষেক ব্যানার্জির অফিসে যাইনি’ আমি আবার বলছি, সংবাদমাধ্যমের কাছে বলো যে, ‘আমি যাইনি।’ তাহলে আমিও সিসিটিভি ফুটেজটা ছাড়ব। তখন বোঝা যাবে কত ধানে কত চাল।’’

বস্তুত, হিরণের সঙ্গে বিজেপির একাংশের সম্পর্ক ভাল নয় বলে তাঁর দলেরই একাংশ বলাবলি করেন। মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে খড়্গপুরের বিধায়ক হিরণের ‘সুসম্পর্কের’ কথাও সুবিদিত। অভিষেক দেবের প্রচারে গিয়ে সেটাই উস্কে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিজেপি নেতাদের অনেকেই বলে থাকেন, চলচ্চিত্র জগৎ থেকে রাজনীতির আঙিনায় এসে হিরণের প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমের কথা। তাঁদের দাবি, হিরণ যে রাজনীতিতে থাকতে এসেছেন, এটা বুঝেই তাঁকে লোকসভায় লড়তে পাঠিয়েছে বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement