শশী পাঁজা। — ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সন্দেশখালি-কাণ্ডের উল্লেখ করে ফের যে দিন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে তীব্র ভাষায় বিঁধছেন, সে দিন তার কিছু ক্ষণ আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশাকর্মীদের বেতন বাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্তকে ‘মোদীর গ্যারান্টি’র পাল্টা হিসেবে প্রচারের পাশাপাশিই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ধরে ধরে বুধবার পাল্টা সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা।
মোদী এ দিন বারাসতের কাছারি ময়দানের সভা থেকে তাঁদের সরকার নারী ক্ষমতায়নে কী কী করেছে, কী কী প্রকল্প রয়েছে, সেই সবের সবিস্তার বর্ণনা দেন। বক্তৃতা শুরু করেন দেবী কালী, দুর্গার নাম নিয়ে। উল্লেখ করেন রানি রাসমণি, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মতো কৃতী বাঙালি নারীর কথা। তার পরেই মোদী বাংলা জুড়ে ‘সন্দেশখালি-ঝড়’ ওঠার কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা প্রথমেই সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির ‘পোস্ট’ করা একটি ব্যঙ্গচিত্রের প্রসঙ্গ তোলেন। তাতে সারদা দেবীর আদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফুটিয়ে তুলে কিছু মন্তব্য করা হয়েছিল। তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শশী বলেন, “বিজেপি মা সারদাকে নিয়ে এখানে কার্টুন তৈরি করেছিল। ব্যঙ্গ করলেন, বিদ্রুপ করলেন। আর মায়ের নামে এখন জয়ধ্বনি দিচ্ছেন! আপনারা তো বলতেন, দুর্গাপুজো, কালীপুজো হতে দেয় না। এখন দিদি যেটা বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, সেটাই মেনে নিতে হল।”
মণিপুর, হাথরসের প্রসঙ্গ টেনে সরব হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সাংসদ সুস্মিতা দেবও। ডেরেকের প্রশ্ন, “নরেন্দ্র মোদী আজ নারীশক্তি নিয়ে বক্তৃতা করেছেন। কিন্তু দেশে প্রতি ঘণ্টায় ৫১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা কেন ঘটছে?” বিজেপির প্রথম প্রার্থী তালিকায় মাত্র ১৪% মহিলা কেন, সে প্রশ্নও তোলা হয় তৃণমূলের তরফে। বিভিন্ন ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তেরা শাস্তি পায়নি বলেও দাবি করেছে তৃণমূল। ডেরেক ও সুস্মিতা দিল্লিতে কুস্তিগিরদের ‘নিগ্রহের’ অভিযোগে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সুস্মিতার আরও তোপ, “বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মালা পারান আপনার বিজেপির লোকজন। আপনি চুপ থাকেন। আপনি আসলে নারী-শক্তি বিরোধী!”