(বাঁ দিকে), ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম (ডান দিকে), ভাইরাল ভিডিয়োর দৃশ্য (মাঝে)। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের আগে বিজেপি কর্মীকে মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল হল উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায়। যে ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ভাটপাড়ার এক তৃণমূল কাউন্সিলর সপাটে চড় কষাচ্ছেন বিজেপি কর্মীর গালে। আনন্দবাজার অনলাইন অবশ্য সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। যদিও এই ভিডিয়ো নিয়ে ভোটের মুখে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায়। অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ। গ্রেফতারি না হলে ‘অন্য ব্যবস্থা’র হুঁশিয়ারি।
সম্প্রতি ভাটপাড়া এলাকায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভাটপাড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর লালন চৌধুরী পরের পর চড়-থাপ্পড় মারছেন এক বিজেপি কর্মীকে। মারের চোটে বিজেপি কর্মী রাস্তায় পড়ে গেলেন। তবুও থামল না চড়-থাপ্পড়। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সেই ভিডিয়ো নিয়েই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে অর্জুনের ‘খাসতালুক’ ভাটপাড়ায়। তৃণমূলের দাবি, মত্ত অবস্থায় দলের পতাকা তুলে দিয়ে বিজেপির পতাকা লাগাচ্ছিলেন ওই যুবক। তারই প্রতিবাদ করে যুবককে সেখান থেকে বার বার চলে যেতে বলছিলেন লালন। কিন্তু কোনও কথা না শুনে যুবক সেখানে দাঁড়িয়েই তৃণমূলের পতাকা তুলে চলেছিলেন। এতে উত্তেজনার বশে যুবককে চড় কষান লালন। মারধরের কথা লালন নিজেও অস্বীকার করেননি। তিনি বলছেন, ‘‘মত্ত অবস্থায় আমাদের ক্যাম্প অফিসের সামনে তৃণমূলের ঝান্ডা তুলে বিজেপির ঝান্ডা লাগাচ্ছিল ওই যুবক। ওকে তিন-চার বার বুঝিয়েছি। কিন্তু কথা শোনেনি। শেষে বাধ্য হয়ে এক থাপ্পড় মেরেছি, তার পরে পালিয়েছে। ভুল করেছে বলেই মেরেছি। বার বার বিরক্ত করছিল বলে মেজাজ হারিয়েছিলাম। বিজেপি নিজেই তো গুন্ডাগিরি করছে। তার পরে ওর সঙ্গে আমার মিটমাট হয়ে গিয়েছে। ফেসবুকে আমার আর ওর একসঙ্গে ছবি ছাড়া হয়েছে।’’
মারধরের কথা স্বীকার না করলেও মত্তের তাণ্ডব রুখতে শক্ত হাতে হাল ধরার দাওয়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন জগদ্দলের তৃণমূলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তিনি বলছেন, ‘‘এটা কি বিজেপির সংস্কৃতি? এটাই কি অর্জুন ‘পল্টুরাম’ সিংহের সংস্কৃতি যে, মদ্যপান করিয়ে বিজেপির ঝান্ডা হাতে দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গালমন্দ করাবেন আর আমাদের সেটাকে বরদাস্ত করতে হবে? আপনার মা, বাবাকে কেউ গালাগালি দিলে আপনার গায়েও লাগবে। এখানেও সেটাই হয়েছে। তবে মারধর না করলে ভাল হত।’’
অর্জুন পাল্টা জবাব দিয়েছেন সোমনাথের মন্তব্যের। তিনি অভিযুক্ত লালনকে এখনই গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন। গ্রেফতারি না হলে ‘বুঝে নেবেন’ বলেও হুমকি দিয়ে রেখেছেন। ব্যারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ বলছেন, ‘‘তৃণমূলের থার্ড গ্রেড কাউন্সিলর লালন চৌধুরী। মানুষের ভোটে জেতেনি, সকাল থেকে বুথ দখল করে জিতেছে। সে মারধর করছে প্রকাশ্যে। পুলিশ-প্রশাসনকে বলব, এখনই ওকে গ্রেফতার করুন। না হলে, এই মারের বদলা, মারের জবাব কী ভাবে দিতে হয়, আমরা জানি। সঠিক সময়ে জবাব দেব। পার্থ ভৌমিককে জিজ্ঞেস করুন, এখানে গুন্ডা কে?’’