দাসপুরের এক বাসিন্দার বাড়িতে চা পান করলেন দেব। —নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে ভিন্রাজ্যে আটকে থাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের অনেক বাসিন্দাকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এ বার নির্বাচনে তাঁরা যেন ভোটদান করতে বাড়ি ফিরে আসেন। সোমবার দাসপুরে নির্বাচনী সভা থেকে এই আবেদন জানালেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব। সোমবার দাসপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচার করেন দেব। সভার শেষে ‘পান্তি পিসি’র বাড়িতে গিয়ে চা-ও খেলেন নায়ক-সাংসদ।
২০২২ সালে ওই মহিলা বাড়ি করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন সাংসদকে। দেব বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে দাসপুরের অনেক ভাই, যাঁরা বাইরে থাকতেন, আটকে ছিলেন। তখন আপনাদের সাংসদ পালিয়ে যায়নি। নেপাল থেকে মুম্বই, দক্ষিণ ভারত— যে যেখানে আটকে ছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছিলাম। দাসপুরে হাসপাতালে যখন প্রচুর চাপ, ঘাটালে আমার অফিসটাকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলাম। অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছিলাম। খাবার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এটা বড় কথা নয়। এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে আপনার সাংসদ পালিয়ে যায়নি। তাই আপনাদের অনুরোধ করব, যাঁকে ইচ্ছা ভোট দিন। কিন্তু আসুন (বাড়িতে)। নিজের ভোটটা নিজে দিন। ভোটটা নষ্ট করবেন না... প্লিজ়!’’
দেবের অনুরোধ, স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ যদি এখনও কর্মসূত্রে বা অন্য কারণে বাইরে থাকেন, পরিবারের সদস্যেরা যেন তাঁদের ভোট দিয়ে যেতে বলেন। দেবের কথায়, ‘‘এই নির্বাচনটা পাঁচ বছরে এক বার হয়। এই ভোটাধিকার আমাদের গর্ব।’’ দেবের বক্তব্যে সোমবারও উঠে এসেছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, এ বার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ বাস্তবায়িত হবে।
অন্য দিকে, বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী জানান, তাঁর ২৫ মিনিটের বক্তব্যে কোথাও কাউকে তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে অসন্মান করার দরকার পড়ে না। কারণ, মানুষ জানে কী কাজ করেছি। আপনারা কেমন প্রার্থী চান, তাঁর আচরণ দেখে নিন।’’ দেব আরও বলেন, ‘‘কিছু কিছু নেতা তাঁদের স্বার্থের জন্য আমাদের ভাগ করে দিতে চাইছেন। যাঁকে ইচ্ছা আপনারা ভোট দিতে পারেন, কিন্তু মাথায় রাখবেন যদি ভগবানের নামে কেউ ভোট চাইতে আসেন, ধর্মের নামে যদি কেউ ভোট চাইতে আসেন, আমার দল হোক বা অন্য দল, আপনারা বলবেন, ‘আমার দরকার নেই।’ কারণ, ধর্মের হাতটা যদি শক্ত করেন তা হলে জীবনে কোনও দিন স্কুল হবে না, কলেজ হবে না। পাড়ায় পাড়ায় শুধু মন্দির থাকবে, মসজিদ থাকবে। এটা আপনাদের বিচার করতে হবে, ভাবতে হবে। আপনারাই ঠিক করবেন কেমন ভবিষ্যৎ চাইছেন।’’