গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মেদিনীপুর এবং বর্ধমান— দুই শহরে মঙ্গলবার দুপুরে তাপমাত্রা ছিল ৪৭ এবং ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমে আইঢাই অবস্থা সকলের। তাই বলে ভোটের প্রচার তো থেমে থাকবে না। তবে গরমে ‘গরমাগরম’ বক্তব্যের বদলে একটু ‘নরম চালে’ প্রচার করলেন তৃণমূলের জুন মালিয়া এবং বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং অগ্নিমিত্রা পাল। গানের মধ্য দিয়ে একে অন্যকে খোঁচা দিলেন, আক্রমণ করলেন এবং জবাবও দিলেন যুযুধান দুই শিবিরের প্রার্থীরা। ভোটের মরসুমে এ যেন খানিক বন্ধনীর বাইরে গিয়ে অন্য রকম ‘খেলা’। তিন লোকসভা প্রার্থীর গলায় গান শুনে সঙ্গীত বিশেষজ্ঞেরা মুচকি হাসতেই পারেন। তবে প্রচারের সভায় হাততালি জুটেছে ভালই।
মঙ্গলবার খড়্গপুরে নির্বাচনী জনসভা করছিলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন। সভায় বললেন অল্প। তার মধ্যে গুঁজে দিলেন দু’কলি গান। জুনের দাবি, এটা ‘অনুপ্রেরণা’। তিনি আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বীর গলায় এই ‘প্যারডি’ প্রথম শুনেছেন। গানটি গোবিন্দ অভিনীত হিট ছবি ‘সাজন চলে শ্বশুরাল’ ছবির। জুন গেয়ে চলেন, ‘‘মোদীজি তুম তো ধোঁকেবাজ হো, ওয়াদা করকে ভুল যাতে হো...।’’ তৃণমূল প্রার্থী গান, থুড়ি প্যারডি শেষ করে জনতার উদ্দেশে আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এলে সবাই যেন এই গান গেয়ে শোনান।
জুনের ওই গান যখন সভায় বাজছে, তখন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অগ্নিমিত্রা দাঁতনে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হয়। তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ‘সাধারণ মানুষ’। এর কয়েক ঘণ্টা পরে জুনের গান পৌঁছে গিয়েছে অগ্নিমিত্রার কানে। জবাব দিতে তিনিও গান, থুড়ি প্যারডি শুরু করলেন। গানে গানে কটাক্ষ করেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নচিকেতার ‘নীলাঞ্জনা’ গানের কথা বদলে অগ্নিমিত্রা গাইতে শুরু করেন, ‘‘মমতার ভনিতা, বেকার সবই তা, মানুষ আর ভুল করবে না, মমতার বাই-বাইয়ের হল সূচনা।’’
দিলীপ অবশ্য প্যারডির ধার ধারেননি। তিনি সোজা ঢুকে গিয়েছেন গানে। তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজ়াদকে প্রথম থেকেই ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ শানিয়ে আসছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই একে অন্যকে চড়া দাগে আক্রমণ শানাচ্ছেন। মঙ্গলবার প্রচণ্ড গরমের কারণে কি না, জানা যায়নি। তবে ‘গায়ক’ দিলীপ আর কটু কথা নয়, হালকা চালে গাইলেন ‘পরদেশি পরদেশি যানা নহি...।’ গান শেষ করে বিশ্বকাপজয়ী ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা তৃণমূল প্রার্থী কীর্তিকে দিলীপের খোঁচা, ‘‘১৩ তারিখের (মে) পর তৃণমূলকে এই গান করতে হবে।’’ দিলীপের গান নিয়ে তৃণমূলের খোঁচা, ‘‘উনি কথা বলার চেয়ে গানই গাইলে ভাল। অন্তত কমিশনে যেতে হবে না আমাদের। কারণ, কথা বললেই তো কুকথা বলবেন।’’