বিশ্বজিৎ দাস। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বনগাঁ লোকভার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন বিশ্বজিৎ। পরে অবশ্য আবার ‘পুরনো দল’ তৃণমূলে যোগ দেন। সেই বিশ্বজিৎকে এ বার বিদায়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ভোটে লড়ার আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা-না দিলে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারত বিজেপি। শুক্রবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিশ্বজিৎ দাবি করেন, বিজেপিতে কাজের পরিবেশই নেই।
গত জানুয়ারিতে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে নিজের বিধানসভা এলাকায় গিয়ে ভোটারদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ। তাঁকে এক গ্রামবাসী সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, ভোটে জিতে আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আপনাকে কী অভিযোগ করব?’’ তখন দলবদল নিয়ে বিশ্বজিতের জবাব ছিল, ‘‘বিধায়কের কোনও দল হয় না।’’ লোকসভা ভোটে তৃণমূল তাঁকে টিকিট দেওয়ার পর হেলেঞ্চা বাজারে বিধায়ক হিসাবে শেষ বক্তব্য করেন বিশ্বজিৎ। সেখানে তিনি বলেন, মানুষের জন্য দলবদল করে বিজেপির প্রতীকে ভোটে লড়েছিলেন। কিন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অন্তরে ছিলেন। বনগাঁর মানুষের কাছ থেকে যে সহায়তা পেয়েছেন, তা সারা জীবন মনে রাখবেন। বস্তুত, বিশ্বজিৎ যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবং তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সেই মুকুল রায়ও কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফিরে যান। বিশ্বজিৎ দাবি করে এসেছেন, জনপ্রতিনিধির কোনও দল হয় না। শুক্রবার বিধানসভায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে গোপালনগরের বাসভবনে বসে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘বিজেপিতে যাওয়া মস্ত বড় ভুল ছিল। বাগদার মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’ পাশাপাশি ‘বিধায়কহীন’ বাগদা প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎ দাবি করেছেন, ‘‘আরও ভাল কিছু পাবে বাগদা।’’
বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে বিজেপিকে নিশানা করে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত দল ওটা। কাজ করার কোনও পরিবেশ নেই। আগেই আমি সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম। আজ থেকে কাগজপত্রে সম্পর্ক ছিন্ন হবে। আমার মনের মণিকোঠায় বাগদার মানুষের স্মৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’’