কেশপুরে ভোটের প্রচারে দেব। শুক্রবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ক’দিন আগেই দেবের সঙ্গে দেখা করে কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক শুনিয়েছিলেন, ‘আমরা ইউকে, মানে ইউনাইটেড কেশপুর থেকে আসছি।’ তবে এলাকায় দল যে আদৌ ‘ইউনাইটেড’ নেই, কেশপুরে প্রচারে এসে তা টের পেলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। সূত্রের খবর, কর্মী বৈঠকে বলেও ফেললেন, ‘‘লবি করছেন কেন? ইউনিটি যদি না থাকে, তা হলে কী করে চলবে?’’
শুক্রবার বিকেলে কেশপুরে আসেন দেব। ‘রোড শো’ এবং কর্মী বৈঠক করেন। সেখানেই তৃণমূল প্রার্থীর মন্তব্য, ‘‘আপনারা (কর্মীরা) কঠিন নন, আপনারা খুব সহজ। একদম জলের মতন। কিন্তু যাঁরা পদ পেয়ে আছেন (নেতারা), তাঁরা প্রচণ্ড কঠিন হয়ে আছেন!’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘একটা নির্বাচন কমিটি করতে এত কষ্ট? ... ছোট একটা বিধানসভা। এখানে আপনাদের মধ্যে এত কিছু হচ্ছে কেন?’’
কেশপুরে তৃণমূলের কোন্দল দীর্ঘ দিনের। এখানে মন্ত্রী তথা বিধায়ক শিউলি সাহা ও ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত পাঁজার মধ্যে দ্বন্দ্ব। এ দিন রোড শো চলাকালীনও দু’পক্ষের মারপিট হাতজোড় করে সামাল দেন দেব। পরে দেবের ব্যাখ্যা, ‘‘আজকে ভিড় ছিল। সবাই দেবের গাড়ির সামনে থাকতে চায়। জায়গা কম। ১০ জনের জায়গায় ৫০ জন ঢুকে গিয়েছে। ওটা না হলেই ভাল হত। তবে তাড়াতাড়ি মিটেও গিয়েছে।’’
তবে কর্মিসভায় অতীত মনে করিয়ে দেব বলেন, ‘‘অতীতটা খুব একটা ভাল নয় কেশপুরের। কিন্তু এটা তো নয় যে, বর্তমানটা ভাল হতে পারে না, ভবিষ্যৎটা ভাল হতে পারে না! পরের প্রজন্ম কি এ রকম মারপিট করবে?’’ তিনি আরও জুড়েছেন, ‘‘আমার পৈতে হয়েছিল কেশপুরে, মহিষদা গ্রামে জেঠুর বাড়িতে। তিন দিন সন্ন্যাসী হয়ে ছিলাম। তিন দিন শুধু বোমার আওয়াজ শুনেছি। সেটা ’৯৫- ’৯৬ সালের কথা।’’
কথা প্রসঙ্গে আক্ষেপ ঝরে পড়েছে দেবের গলায়, ‘‘এত কিছুর মধ্যে আমি কেন থাকব? এই জন্যই আমি না করেছিলাম। দিদি বলল, না, দাঁড়াতে হবে।’’ তাঁর উপলব্ধি, ‘‘ঘাটালটা এতটাও সহজ সিট নয়। তাই আমার অনুরোধ, নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করুন।’’
এ দিন ঘাটাল উত্তরেও জমেনি দেবের প্রচার। দিনের শেষে ইড়পালায় পাতলা ভিড়েই ছুটেছে দেবের প্রচার গাড়ি। যদিও দেবের প্রচার সফল করতে সব রকম প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছিল। তার উপরে আবার খড়ার মাঠে ক্রিকেটের মাধ্যমে জনসংযোগ করতে গিয়ে তাল কাটে। ঘাটালের এক নেতা বল করছিলেন। দেব ব্যাট করছিলেন। বল গিয়ে চোখে লাগে এক স্কুল ছাত্রীর। খেলা বন্ধ করে দেন দেব। মেয়েটির শুশ্রুষা করে তাকে দুপুরের খাওয়ার সময়ও ডেকে নেন তিনি।
কম ভিড় নিয়ে তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজির ব্যাখ্যা, ‘‘উৎসাহ ছিল। তবে দুপুরে চড়া রোদ, তাই অনেকে বেরোননি।’’