মল্লিকার্জুন খড়্গে। ছবি: পিটিআই।
রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে অমেঠী ও রায়বরেলী থেকে প্রার্থী করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কংগ্রেস হাই কম্যান্ড নেবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে নিজে সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেবেন।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে আজ অমেঠী ও রায়বরেলী নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী কমিটির সকলে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কাকে অমেঠী, রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জোরদার আর্জি জানিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত খড়্গে ও সনিয়ার উপরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসের একটি সূত্র মনে করছে, রাহুল গান্ধী এ বার সনিয়া গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া লোকসভা কেন্দ্র রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হতে পারেন। প্রিয়ঙ্কাকে স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে অমেঠী থেকে প্রার্থী করা কৌশলগত ভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে বলে কংগ্রেসের অনেক নেতার মত। কারণ রাহুল গান্ধী গত লোকসভা নির্বাচনে স্মৃতির কাছে অমেঠী থেকে হেরে গিয়েছিলেন। কংগ্রেসের আরেকটি সূত্র বলছে, রাহুল অমেঠী বা রায়বরেলী, কোনও একটি আসন থেকে প্রার্থী হবেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে তিনি ১ মে মনোয়ন জমা দিতে পারেন। প্রিয়ঙ্কা এখনও প্রার্থী হতে নারাজ। অমেঠী, রায়বরেলীতে ২৬ মে ভোটগ্রহণ।
কংগ্রেস আগেই ঠিক করে রেখেছিল, কেরলের ওয়েনাড়ে ভোট মিটে গেলেই অমেঠী, রায়বরেলী আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গত লোকসভায় অমেঠীতে হেরে গেলেও ওয়েনাড় থেকে জিতে রাহুল সংসদে গিয়েছিলেন। ওয়েনাড়ের ভোটগ্রহণের আগে রাহুল গান্ধী কেরলের ওই কেন্দ্রের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ থেকেও ভোটে লড়বেন, এমন কোনও বার্তা কংগ্রেস দিতে চায়নি। কারণ বামেরা ওয়েনাড়ে প্রচার করছিল, রাহুল গান্ধী এ বার অমেঠী বা রায়বরেলী থেকে জিততে পারলে তিনি ওয়েনাড় ছেড়ে চলে যাবেন। উত্তরপ্রদেশের সাংসদ পদই ধরে রাখবেন।
ওয়েনাড়ে ২৬ এপ্রিল ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকে অমেঠী, রায়বরেলী নিয়ে আলোচনা হয়। তার আগে শনিবার সকালে কংগ্রেস সভাপতি গুয়াহাটিতে বলেছিলেন, অমেঠী-রায়বরেলীর প্রার্থী জানতে আর দু’একদিন অপেক্ষা করতে হবে। বিজেপি অমেঠী থেকে সাংসদ স্মৃতি ইরানিকে ফের প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেও রায়বরেলীর প্রার্থী এখনও ঘোষণা করেনি। কংগ্রেসের রায়বরেলীর প্রার্থী দেখেই বিজেপি নিজের প্রার্থী ঠিক করবে। স্মৃতি অবশ্য আগেভাগেই রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন ধরে নিয়ে নিশানা করতে শুরু করেছেন।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, অমেঠী ও রায়বরেলীর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত না হলেও দুই লোকসভা কেন্দ্রে প্রস্তুতি থেমে নেই। গত চার মাস ধরেই বুথ ও ব্লক স্তর থেকে স্থানীয় পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে রিপোর্ট আসছে। বুথ স্তরে এজেন্টদেরও কাজে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতা কে এল শর্মা অন্যান্য বারের মতোই এ বার দায়িত্বে রয়েছেন। কংগ্রেসের ইস্তাহার রায়বরেলী ও অমেঠীর ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবার অমেঠীর সাংসদ স্মৃতি ইরানিকে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে নিশানা করতে চাইছে। অমেঠীর সাংসদ হওয়ার আগে স্মৃতি কী কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কী কী পূরণ হয়নি, তা নিয়ে স্মৃতিকে চেপে ধরতে চাইছে তারা।