—প্রতীকী ছবি।
পুরসভা নির্বাচনে রানাঘাট শহরে ভরাডুবি হয়েছিল বিজেপির। যদিও তার আগে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট শহরেই ঘাসফুলকে পিছনে ফেলে এগিয়েছিল পদ্ম। তাই এবার লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাটের মানুষ কোন ফুল পছন্দ করবেন, এখন সেই অঙ্ক কষতে ব্যস্ত তৃণমূল এবং বিজেপি।
প্রায় দশ বছর আগে ২০১৫ সালের পুরসভা নির্বাচনের সময় শহরের ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টিতে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। তার মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তারা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও শহরের একটি ওয়ার্ড বাদ দিয়ে বাকি ১৯টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় রানাঘাট শহরেই প্রায় আড়াই হাজার ভোটে তৃণমূলের তুলনায় এগিয়ে ছিল বিজেপি। অথচ ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয় তাদের। শহরের ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র একটি ওয়ার্ডে (৭ নম্বর) জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী। ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে সেই সময় শহরের দুই বিজেপি নেতা পদ থেকে অব্যাহতি দেন।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট যে, শহরের একটা বড় ভোটব্যাঙ্ক বিজেপির দিকে ছিল। যদিও গত পুরসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়েনি। আবার সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের যোগ দিয়েই রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন মুকুটমণি অধিকারী। ফলে দলবদলের এই রাজনীতির প্রভাব তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে অনেকটাই বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। যদিও রাজনৈতিক মহলের আর একটি অংশ মনে করছে, লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের সঙ্গে পুরভোটের হিসাব না মেলারই কথা। কারণ পুরভোট হয় সম্পূর্ণ স্থানীয় স্তরে। এর সাথে রাজ্য বা দেশের রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে এবারের নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে চিকিৎসক অতীন্দ্রনাথ মণ্ডলের নাম প্রথম থেকেই চর্চায় ছিল। তিনি রানাঘাট শহরের বাসিন্দা। অনেকেই বলছেন, নির্বাচনে হার-জিৎ যাই হোক না কেন, কয়েক যুগ পর রানাঘাট শহরের কোনও বাসিন্দার নাম লোকসভার প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছিল। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমীকরণে অদল বদলের প্রবল সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে বিজেপি ছেড়ে আসা মুকুটমণি অধিকারীর নাম ঘোষণা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, "গত পাঁচ বছরে রানাঘাট শহরের মানুষের সঙ্গে আমার সরাসরি যোগাযোগ ছিল। তাই শহরের মানুষ এবারও বিজেপির উপরেই আস্থা রাখবেন। পঞ্চায়েত বা পুরভোটের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনকে তুলনা করা ঠিক নয়।"
তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী বলেন, "প্রার্থী হব বলে তৃণমূলে যোগ দিইনি। মানুষের জন্য যাতে কাজ করতে পারি, সে জন্যই আমার দলবদল। আশা করি রানাঘাটের মানুষ আমাকে সেই সুযোগ দেবেন।"