Lok Sabha Election 2024

পাহাড়ে ‘অমিতহীন’ সভায় ফের দাবি আলাদা রাজ্যের

গত কয়েক দিন ধরে বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, সিপিআরএম পাহাড় সমস্যা মেটাতে দিল্লিতে কাজ চলছে বলেই প্রচারে নামেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোট-প্রচারের শেষ লগ্নে প্রতি বারের মতো এ বারেও আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে প্রচার শুরু হয়ে গেল। বিজেপি-বিরোধীদের অভিযোগ, ভোট-বাজারে নেমে হাল খারাপ বুঝে ফের আলাদা রাজ্য বা পাহাড়ের আবেগকে ‘নিলাম’ করে ভোট পার করতে চাইছে বিজেপি। যদিও বিজেপির দাবি, রাজ্য-ভাগ নয়, গোর্খাদের সাংবিধানিক পরিকাঠামোর মধ্যে আনার প্রচেষ্টাই চলছে।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, সিপিআরএম পাহাড় সমস্যা মেটাতে দিল্লিতে কাজ চলছে বলেই প্রচারে নামেন। পাহাড়-সমস্যা (মূলত, গোর্খাদের জন্য পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং ১১টি জনজাতিকে তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত করার দাবি) সমাধানের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি, ভোট-প্রচারে শিলিগুড়িতে এসে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার সূত্র ধরেই প্রার্থী হয়ে প্রচারে নামেন রাজু বিস্তা। রবিবার দার্জিলিঙের লেবংয়ের মাঠের সভায় টেলিফোনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও গোর্খাদের ন্যায্য দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পরে এক ধাপ এগিয়ে আলাদা রাজ্যের প্রচারে নেমে পড়লেন বিমল গুরুংরা।

এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। তিনি বলেছেন, ‘‘ভোট এলেই গোর্খাল্যান্ড নিলাম করা হয়। এ বারও তাই শুরু হয়ে গেল।’’ তিনি জানান, রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই পাহাড়ের শান্তি, উন্নয়নের রাস্তা মানুষ বেছে নিয়েছেন। রাজ্যের দাবি তুলে কোথাও শান্তি বিঘ্নিত হতে দেওয়া যাবে না।

Advertisement

রবিবার দার্জিলিঙের সভায় অমিত শাহ পাহাড় নিয়ে নতুন কী বলেন, সে দিকে তাকিয়েছিলেন পাহাড়বাসী। কারণ, দার্জিলিং আসনে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা প্রচারে গিয়ে, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে কাজ চলছে’ বলে জানাচ্ছেন। যদিও গোর্খাদের দাবিদাওয়া বিজেপির ইস্তাহারে ‘নেই’ বলে অভিযোগে সরব বিরোধীরা। সেই প্রেক্ষিতে শাহের মতো বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা কী বলেন, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল দলের অন্দরে-বাইরে। পাহাড় সমস্যা, ১১ জনজাতি প্রসঙ্গ ছাড়াও অমিত ফোন-বার্তায় জানান, প্রধানমন্ত্রী দার্জিলিঙের পর্যটন, চা বাগানের জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। শ্রম আইন রাজ্য সরকার চালু করতে দেয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘কমিউনিস্ট এবং তৃণমূল পাহাড়কে রক্তাক্ত করেছে। দার্জিলিঙের শান্তি একমাত্র বিজেপিই রাখতে পারে। তাই বিজেপি প্রার্থীকে জেতাতে হবে।’’
যা নিয়ে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘উনি তো ভোটপাখি। ভোট এসেছে, তাই চলে এসেছেন। বিজেপি তা আজ অবধি করেনি। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোর্খাদের আবেগ নিয়ে খেলা করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, ‘‘উনি পাহাড় নিয়ে কী জানেন, তাতে সন্দেহ রয়েছে। সিপিএম বা বামফ্রন্ট সরকারই পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। বরাবর আমরা শান্তির জন্য লড়েছি। উনি শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে আসেন আর চলে যান।’’ শনিবার রাতেই শিলিগুড়ি পৌঁছন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাতে শহর লাগোয়া একটি চা পর্যটন রিসর্টে ছিলেন। এ দিন লেবংয়ে তাঁর সভা করার কথা থাকলেও, আবহাওয়া খারাপ থাকায় তাঁর কপ্টার সেখানে নামতে পারেনি। তাঁর উপস্থিতি ছাড়াই সভা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement