বিজেপির সভায় শুভেন্দু অধিকারী ও সাংসদ জগন্নাথ সরকার। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
বিজেপি ছেড়ে রানাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া মুকুটমণি অধিকারীর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র রানাঘাট দক্ষিণে এসে তাঁকে নিশানা করলেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার রানাঘাট শহর লাগোয়া আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি মাঠে আয়োজিত জনসভা করেত আসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। কী কী বিষয় সামনে রেখে লড়াই করতে হবে, তাও নির্দিষ্ট করে দেন তিনি। সেই সঙ্গে তোলেন সিএএ, মতুয়া, উদ্বাস্তু, রাজ্যের নারী নিরাপত্তার মত নানা প্রসঙ্গও।
বক্তব্যের শুরুতে মতুয়া প্রসঙ্গ তুলেই মুকুটমণির নাম না করেও শুভেন্দু দাবি করেন, "সাংসদ হওয়ার লোভে দলবদল করেছে। একা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। এক জন কর্মীকেও নিয়ে যেতে পারেনি। ভাইপোর পায়ে নিজেকে আত্মসমর্পণ করেছে। কয়েক দিন আগেও বিধানসভায় 'মমতা চোর' লেখা টি-শার্ট পড়ে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীকে দেখা গিয়েছিল। তিনি এখন দলবদল করে 'সাধু' হয়েছেন।" এ প্রসঙ্গে মুকুটমণি শুধু বলেন, "শুভেন্দুবাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন। তাই তাঁর মুখে এ ধরনের মন্তব্য শোভা পায় না।"
সিএএ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর দাবি, "১৯৪৫ সালে প্রমথরঞ্জন ঠাকুর সম-নাগরিকত্বের যে লড়াই শুরু করেছিলেন, তা এবার পূরণ হয়েছে। এখন আর প্রশাসনিক কাজে কেউ বলতে পারবে না, ১৯৭১ সালের আগের দলিল নিয়ে আসুন।" শুভেন্দুর আশ্বাস, "নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে কোনও নথি লাগবে না। সবাইকে এই আবেদন করতেও হবে না। গৃহ মন্ত্রক আবেদনের ভিত্তিতে শংসাপত্র প্রদান করবে। নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। এই আইনে মুসলিম এক জনেরও ক্ষতি হলে আমি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেব।"
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রটি মতুয়া গড় বলেই পরিচিত। বিগত নির্বাচনগুলিতেও মতুয়া ভোট জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ণায়ক হয়ে উঠেছে। যে কারণে দ্বিতীয় বার এই কেন্দ্র নিজেদের দখলে রাখতে বিজেপি মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের উপরে অনেকটা নির্ভরশীল। আবার অন্যতম মতুয়া-মুখ মুকুটমণি এখন তৃণমূলের প্রার্থী। যে কারণে রানাঘাট কেন্দ্রটিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। নির্বাচনের আগে তিনি শান্তিপুর ও নবদ্বীপেও আসবেন বলেও শুভেন্দু জানিয়েছেন।
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, "তৃণমূল নেতাদের চুরি, দুর্নীতি ও সন্দেশখালর ঘটনাকে সামনে রেখেই এবারের নির্বাচনে লড়াই করবেন।" তবে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, "শুভেন্দু অধিকারীর সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতি মেলে না। তিনি যত বেশি রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে আসবেন, তত আমাদের ভোট বাড়বে।"