শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির প্রসঙ্গে মেজাজ হারালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অশালীন শব্দ ব্যবহার করলেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ভিডিয়ো এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন। যা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
বুধবার বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখান থেকে ফেরার পথে তাঁকে উদ্দেশ্য করে কেউ বা কারা স্লোগান দিতে শুরু করেন। অভিযোগ, কাছেই তৃণমূলের একটি জনসভা চলছিল। শুভেন্দু গাড়িতে ওঠার সময়ে সেখান থেকেই তাঁকে উদ্দেশ করে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে মাইকে মন্তব্য করা হয়। যা শুনে তিনি মেজাজ হারান।
অভিষেক যে ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু গাড়িতে উঠছেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন দেহরক্ষীরা। পুলিশও রয়েছে সেখানে। পিছন দিক থেকে ভেসে আসছে মাইকের স্লোগান। তাতে বলা হচ্ছে, ‘‘সন্দেশখালির অপমান, মহিলাদের অপমান।’’ এই স্লোগান শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন শুভেন্দু। পাল্টা চিৎকার করেন তিনি। তখনই তাঁকে অশালীন শব্দবন্ধ ব্যবহার করতেও শোনা যায়। অভিষেক এই ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘বিজেপির নারীশক্তি সম্মানের মডেল! নিজের চোখে দেখুন, তার পর বিশ্বাস করুন।’’
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উনি কী বলেছেন আমি শুনিনি। তবে এটুকু বলতে পারি, বিনা প্ররোচনায় উনি কিছু বলেননি। উনিও তো রক্ত মাংসের মানুষ! তবে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন, বিনা প্ররোচনায় কী ভাবে ভাষণের মাঝে অমৃতবর্ষণ করা যায়। বেশ কয়েক বার করেছেন। মানুষ এর বিচার করবেন।’’
উল্লেখ্য, সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তা ভোটের মুখে রাজ্যের শাসকদলকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সমীকরণ কার্যত উল্টে যায় গত শনিবার। প্রকাশ্যে আসে সন্দেশখালিতে করা একটি ‘স্টিং অপারেশন’ বা গোপন ক্যামেরা অভিযানের ভিডিয়ো। সেখানে দেখা যায়, স্থানীয় বিজেপি নেতা নিজে স্বীকার করছেন, সন্দেশখালির আন্দোলন সাজানো। টাকার বিনিময়ে সেখানকার মহিলারা তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। যা আদতে অসত্য। ভিডিয়োটিতে বার বার শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর নামও। বিজেপিই টাকা দিয়ে সন্দেশখালির ঘটনা সাজিয়েছে বলে অভিযোগ। ‘স্টিং ভিডিয়ো’তে বিজেপি নেতার এই স্বীকারোক্তি সাড়া ফেলে দেয় বাংলার রাজনীতিতে। ভিডিয়োটিকে ভুয়ো এবং ‘ডিপফেকের মাধ্যমে তৈরি’ বলে দাবি করেছে বিজেপি। যে নেতাকে ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তিনি সিবিআই তদন্তও চেয়েছেন। তবে এই ভিডিয়োটি নিয়ে কোমর বেঁধে আসরে নেমেছে তৃণমূল। শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে সন্দেশখালি ইস্যুতে তুলোধনা করছে তারা। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে এই অভিযোগ সাজিয়ে সন্দেশখালিতে মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি। মহিলাদের সম্মান নিয়ে ছেলেখেলা করা হয়েছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে বদনাম করা হয়েছে বাংলার। বুধবার বাঁকুড়াতেও সেই আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে শুভেন্দুকে। যা শুনে তিনি মেজাজ হারিয়েছেন।