—প্রতীকী ছবি।
ফের রাজনৈতিক ঝড় ঘনীভূত কংগ্রেসের অন্দরে! তবে রাজ্য তথা কলকাতায় প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আপাতত রাজনৈতিক ঝড়কে ঠেকিয়ে রাখতে পারে!
কলকাতায় নিজের কর্মসূচিতে আজ, রবিবার আসার কথা এআইসিসি নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদের। কিন্তু এআইসিসি-র তরফে এই কর্মসূচির কথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ অধীর চৌধুরীর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ক্ষোভ, এআইসিসি বারেবারেই নিজের মতো চলছে। রাজ্যের বিষয়েও প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় রাখছে না। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে বিধান ভবনের সামনে তাঁর পোস্টারে কালি লাগানোর ঘটনায় এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল দলের পর্যবেক্ষকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন। সেই ঘটনায় এখনও ক্ষোভ রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে। ভোট চলাকালানী তাতেই আরও বাড়তি ইন্ধন যোগ করেছে খুরশিদের সফর-সূচি!
তবে এ বারের বিতর্কের জল বেশি দূর গড়ানোর আগে ঠেকিয়ে দিতে পারে প্রকৃতিই! কারণ, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় আজ দুপুর থেকে উড়ান ওঠা-নামা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। দিল্লি থেকে খুরশিদের নির্ধারিত উড়ান দুপুরেই। ফলে, এআইসিসি নেতার সফর এই যাত্রায় বাতিল হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল! সে ক্ষেত্রে আর শহরে এসে এআইসিসি ও প্রদেশ কংগ্রেস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে না তাঁকে।
কলকাতায় এসে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে আজ সন্ধ্যায় বেলগাছিয়া এলাকায় কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্যের সমর্থনে প্রচারে যাওয়ার কর্মসূচি ঠিক হয়েছিল খুরশিদের। যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের বক্তব্য, ‘‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে কেউ জানায়নি। এআইসিসি তাদের মতো করে কর্মসূচি ঠিক করেছে।’’ প্রসঙ্গত, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এখন কলকাতায়। উত্তর কলকাতায় শনিবার প্রদীপের প্রচারেই গিয়েছিলেন তিনি।
কংগ্রেসেরই অন্য একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সংক্রান্ত এআইসিসি-র গোষ্ঠীর সদস্য খুরশিদের কর্মসূচির বিষয়ে দিল্লির তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেসের কমিউনিকেশন বিভাগের সঙ্গে। এ সব ক্ষেত্রে তেমনই দস্তুর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে আলাদা করে জানানো এআইসিসি-র রীতি নয় বলে ওই সূত্রের দাবি।
দলের অন্দরে অবশ্য বিষয়টিকে কেবলই যোগাযোগের বিভ্রাট হিসেবে দেখা হচ্ছে না। দলীয় সূত্রের মতে, সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক বেণুগোপালের নানা কাজকর্মে বারেবারেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে ‘অবজ্ঞা’ করার অভিযোগ উঠে আসছে। অথচ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিজেও এআইসিসি-র ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। খুরশিদের সফর নিয়ে ওঠা প্রশ্নও সেই সার্বিক বাতাবরণের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। তবে তার আরও পল্লবিত হওয়া আটকে দিতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগই!