—প্রতীকী চিত্র।
বামেদের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত করার আগে মেপে পা ফেলছে কংগ্রেস। এখনও চলছে নানা অঙ্ক কষা! দিল্লিতে আজ, মঙ্গলবার কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক থাকলেও এ রাজ্যের কত জন প্রার্থীর নামে সেখানে সিলমোহর পড়তে পারে, সোমবার রাত পর্যন্ত তার স্পষ্ট ইঙ্গিত নেই! বাম শিবিরে অবশ্য তৎপরতা অব্যাহত।
সূত্রের খবর, রাজ্যে অন্তত ১২টি আসনের জন্য সিপিএমের কাছে দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। তার মধ্যে ৮টি আসনের বিষয়ে আগেই নিষ্পত্তি হয়েছিল। আরও দু’টি আসনে রফা প্রায় চূড়ান্ত। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং বীরভূম থেকে একটি করে আসনের জন্য মীমাংসা-সূত্র বার করার চেষ্টা চলছে। তবে সমস্যা হল, এক জেলায় কংগ্রেস যে আসন চাইছে আর সিপিএম যা দিতে চাইছে, তার মধ্যে ফারাক রয়ে যাচ্ছে। য়েমন, নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর আসনে ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে সিপিএম। অপর আসন রানাঘাটে কংগ্রেসের তেমন প্রভাব বা সংগঠন কিছুই নেই। একই ভাবে কংগ্রেসের সাংগঠনিক কোনও প্রতিপত্তি ব্যারাকপুরে না থাকলেও উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলে ওই আসনই তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে সিপিএমকে। আবার বীরভূম আসনে কংগ্রেসের উৎসাহ আছে, সিপিএম প্রয়োজনে বোলপুর ছেড়ে বীরভূমেই লড়তে চায়। যদিও সিপিএম নেতৃত্বের আশা, অঙ্ক শেষ পর্যন্ত মিলিয়ে দেওয়া যাবে।
তাঁরা ঠিক কী চাইছেন, সে ব্যাপারে কংগ্রেস নেতৃত্ব তেমন কিছুই বিশেষ খোলসা করছেন না। প্রদেশ নির্বাচন কমিটির পরে প্রার্থী বাছাই নিয়ে স্ক্রিনিং কমিটিতে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, তা-ও পরিষ্কার নয়। সূত্রের ইঙ্গিত, দিল্লিতে আজ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটিতে ভোটের প্রথম দুই দফার কেন্দ্রগুলির প্রার্থী নিয়ে কথা হওয়ার সম্ভাবনা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন শুধু বলেছেন, ‘‘রাজ্যের সব আসনে লড়াই করার জায়গায় আমরা নেই। কিছু জায়গায় আমরা প্রার্থী দেব।’’ বামেদের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা চললেও সরাসরি আইএসএফের সঙ্গে কংগ্রেস কোনও রফায় যাবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অধীর। যার মানে দাঁড়াচ্ছে, নানা শক্তির মধ্যে সেতু হওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে সিপিএমকেই!
সিপিএমের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন নিজেদের দলে বৈঠকে বসেছিল সিপিআই ও ফরওয়ার্ড ব্লক। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল আসন ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, সেই ব্যাপারে আলোচনার জন্য আগামী ২২ মার্চ দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছে সিপিআই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। সিপিআইয়ের যুক্তি, ঘাটালে ভোট পঞ্চম দফায় পড়ায় হাতে সময় আছে। পুরুলিয়া নিয়ে ফ ব অবশ্য আগের অবস্থানেই আছে। তবে একটি আসন নিয়ে বেশি জেদাজেদি করা উচিত কি না, সেই প্রশ্ন আছে ফ ব-র অন্দরেও। অন্য দিকে, আইএসএফ-ও নতুন করে কোনও দাবি তোলনি। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্য অবশ্য বলছেন, ‘‘ভোটের আগে যথেষ্ট সময় আছে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস-বিরোধী সমঝোতায় যথাসময়েই পৌঁছে যাওয়া যাবে।’’