—প্রতীকী চিত্র।
শেষ হয়েছে ‘হাই ভোল্টেজ’ লোকসভা ভোট। মাঝে বিরতি দু’দিনের। তার পরে চূড়ান্ত ফলাফল। যদিও শনিবার, ভোটের রাতেই চলে এসেছে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল। তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে এজেন্টদের প্রতি এক পক্ষের নেতাদের পরামর্শ, গণনা কেন্দ্রের মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে। বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলকে চূড়ান্ত ধরে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হলে চলবে না। অন্য পক্ষের নেতা-কর্মীরা বলছেন, বুথ ফেরত সমীক্ষা হামেশাই ভুল প্রমাণিত হয়। গণনা কেন্দ্রের ভিতরে গা ঢিলে দিলে হবে না— পরামর্শ তাঁদেরও।
এরই মধ্যে আড়াই মাসের প্রচারের ধকল কাটিয়ে রবিবার প্রার্থীদের অনেকে কিছুটা আরাম করলেন। কেউ কেউ অবশ্য বললেন, আরামের সময় এটা নয়। এখনও ধৈর্যের পরীক্ষা বাকি। জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারী জানালেন, ভোটের দিন বহু বিজেপি কর্মী মার খেয়েছেন। অনেকের বাড়িতে হামলা হয়েছে। রবিবার তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন অশোক। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলে তাঁদের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি, সন্ধ্যায় স্ট্রং রুম পরিদর্শনে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল এ দিন অবশ্য পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন। প্রতিমা জানান, অনেক দিন সে ভাবে খবরের কাগজে চোখ রাখতে পারেননি। এ দিন সব কাগজ খুঁটিয়ে পড়েছেন। বুথ ফেরত সমীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করেছেন।
যাদবপুরের আইএসএফ প্রার্থী নুর আলম খান ভোটের পরে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিশেষত, ভোটের দিন এবং তার আগে যে কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের দেখতে রবিবার ভাঙড়, বারুইপুর (পূর্ব)-সহ বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় যান তিনি। বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নুর বলেন, ‘‘এখনও অনেক লড়াই বাকি। আক্রান্ত কর্মীদের পাশে সারা বছর থাকতে চাই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পথেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
যাদবপুর কেন্দ্রেরই শাসকদলের প্রার্থী সায়নী ঘোষ এ দিন সকালে গণনা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। পরে বৈঠক করেন গণনা কেন্দ্রের এজেন্টদের সঙ্গে। সায়নী বলেন, ‘‘গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামের জায়গা নেই। এক ইঞ্চি জমিও কোনও ভাবে ছাড়া হবে না।’’
এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য রবিবার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা
করেছেন। বিশেষ করে আক্রান্ত কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সৃজনের কথায়, ‘‘আমাদের বসে থাকার জায়গাই নেই। লড়াইয়ের ময়দানে থাকতে হবে।’’
বনগাঁয় ভোট মিটেছে গত ২০ এপ্রিল। তার পর থেকে ব্যস্ততার মধ্যেই রয়েছেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। চলছে জনসংযোগের কাজ। দিনকয়েক আগে বনগাঁর গ্রামে দু’জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। ভোটের ব্যস্ততা থাকায় তখন যেতে পারেননি শান্তনু। ভোট মিটলে সেখানে গিয়ে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। ভোটের দিন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করছেন।
বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসও জানালেন, গত ২০ তারিখ নিজের কেন্দ্রে ভোট হওয়ার পরে বারাসত ও বসিরহাট কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেছেন। দলীয় কার্যালয়ে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। একই সঙ্গে বিশ্বজিৎ জানান, প্রচারের আগে ঘুম প্রায় হচ্ছিল না। তবে গত কয়েক দিন ঘুম ঠিকঠাক হচ্ছে।