Lok Sabha Election 2024

দমদমে অন্তর্দ্বন্দ্ব ‘কাঁটা’ তৃণমূলের, বামেদের ভোট বাড়লেই কি স্বস্তি

অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়ছিল শুক্রবার রাত থেকেই। শুক্রবার রাতে দমদমের বিশরপাড়া, বেদিয়াপাড়ার একাধিক জায়গার বুথে এজেন্ট ও কর্মীদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের মতো অভিযোগ উঠতে থাকে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান ও কাজল গুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৭:৫১
Share:

মারমুখী: ভোটের সকালে দমদমের বেদিয়াপাড়া এলাকায়। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

‘দমদম দাওয়াই’ হয়তো ছিল না। তবে বেলা বাড়তে ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর, এজেন্টকে ভয় দেখিয়ে মারধর করে তুলে দেওয়া, কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া, বুথের সামনে বহিরাগতদের দাপাদাপির অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছিল। সেই সঙ্গে ছিল প্রার্থী ও দলীয় কর্মীদের মধ্যে চোরা টেনশন। কারণ, অনেকেই মনে করছেন দমদম কার হবে, এটা এ বার জটিল ধাঁধার মতো। জেতার জন্য নানা অঙ্ক কষতে হচ্ছে তিন প্রধানকেই। তাই হয়তো তিন প্রধান দলের প্রার্থীরা মাটি কামড়ে দমদমে পড়ে থাকলেন। তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় জানালেন, তাঁর কিছু ক্ষণের অনুপস্থিতিতে যদি তাঁর কেন্দ্রে কোনও অশান্তি ছড়ায়, তাই নিজের ভোটটিও দিতে যাননি।

Advertisement

অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়ছিল শুক্রবার রাত থেকেই। শুক্রবার রাতে দমদমের বিশরপাড়া, বেদিয়াপাড়ার একাধিক জায়গার বুথে এজেন্ট ও কর্মীদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের মতো অভিযোগ উঠতে থাকে। শনিবার সকাল থেকেই দমদমের বেদিয়াপাড়ায় অশান্তি ছড়ায়। সিপিএমের ভোটের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর এবং কর্মীদের বার করে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন বামকর্মীরা। দমদমের বিধায়ক তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, এমন ঘটনা ঘটলে বরদাস্ত করা হবে না। ঘটনাস্থলে যান সৌগতও। অভিযোগ, এলাকা থেকে সৌগত বেরিয়ে গেলে ওখানে ফের শাসকদলের কর্মীদের অবাধ যাতায়াত বাড়ে। একই ছবি মাঠকল এলাকাতেও দেখা যায়। বিলকান্দার একটি বুথে সিপিএম এজেন্টকে মারধর করে তুলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, পুরোটাই বাম প্রার্থীর ‘কুনাট্য’।

সকাল থেকে খড়দহ, পানিহাটির বিভিন্ন বুথ চষে বেড়ান সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। বুথ জ্যাম ও এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে ছুটে যান তিনি। অন্য দিকে, তৃণমূলের অভিযোগ, বিরোধীরা শুক্রবার রাতে খড়দহের তাদের একটি কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, ওই ঘটনা তৃণমূলের দলীয় কোন্দলের ফল।

Advertisement

রাজারহাট-গোপালপুরের রঘুনাথপুরে সিপিএমের একটি বুথ-ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়, বামকর্মীদের মারধর ও বন্দুক নিয়ে তাড়া করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত জানান, খড়দহ, পানিহাটি, নিউ ব্যারাকপুর, উত্তর দমদম, রাজারহাট-গোপালপুরে বুথ এজেন্টকে বসতে বাধা, তাঁদের কর্মীকে মারধর-সহ একাধিক ঘটনা ঘটেছে। শীলভদ্রের দাবি, তাঁদের কর্মীরা সমানে সমানে লড়াই করেছেন। সুজনের দাবি, বামেরাও শাসকের তাণ্ডব প্রতিহত করেছে। সৌগতের অবশ্য দাবি, ‘‘কোনও সন্ত্রাস হয়নি। আমরা জেতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।’’

তবে তৃণমূল মনে করছে, এ বার বামেদের শক্তি বাড়লে শাসক দলেরই লাভ। কারণ, তাঁদের মতে গত বার যে বাম ভোট রামে গিয়েছিল, তা এ বার বামে ফিরলে এগিয়ে থাকবে তৃণমূলই। অন্য দিকে, বিরোধীদের দাবি, এ বার তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত হয়েছিল। সব তৃণমূল সমর্থক কি তাদেরকেই ভোট দিয়েছে? সেই দিক থেকে ‘অ্যাডভান্টেজ’-এ বিরোধীরাই।

কামারহাটির একটি বুথের সামনে দেখা গেল, ভোটের শেষে বিকেলে সাপ-লুডো খেলছিলেন কয়েক জন দলীয় সমর্থক। তবে দমদমে কোন দল মই দিয়ে তরতরিয়ে উঠে গেল, আর কে খেল সাপের কামড়, তার উত্তর মিলবে ৪ জুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement