(বাঁ দিক থেকে) নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিংহ সান্ধু, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। ছবি পিটিআই।
দেশের দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের উপর এখনই কোনও স্থগিতাদেশ দিতে রাজি নয় সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষ আদালত জানাল, আগামী সপ্তাহে এই মামলার আবারও শুনানি হবে।
বৃহস্পতিবারই নির্বাচন কমিশনের জোড়া শূন্যপদে দুই আমলাকে নিয়োগ করা হয়। দেশের দুই নির্বাচন কমিশনারের পদে নিয়োগ করা হয়েছে সুখবীর সিংহ সান্ধু এবং জ্ঞানেশ কুমারকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটিই এই দুই নাম চূড়ান্ত করেছে। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন তাঁর মনোনীত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী। কমিটির বৈঠক শেষে অধীরই দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কথা জানান।
গত ৮ মার্চ আচমকাই নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দেন অরুণ গোয়েল। তাঁর ইস্তফা দেওয়ার পরে কমিশনে নির্বাচন কমিশনারের দু’টি পদই ফাঁকা হয়ে যায়। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাসেই অন্য নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন অনুপ পাণ্ডে।
তার পরই কেন্দ্রীয় সরকার নতুন কমিশনার নিয়োগের ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি বৃহস্পতিবারই দেশের দুই নির্বাচন কমিশনারের নাম ঠিক করে ফেলে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে সুখবীর ১৯৯৮ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক। কর্মজীবনে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অন্য দিকে, জ্ঞানেশ ১৯৮৮ সালের কেরল ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক। কর্মজীবনে সমবায় মন্ত্রকের সচিব এবং সংসদীয় মন্ত্রকের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে একটি রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য দুই নির্বাচন কমিশনারকে তিন সদস্যের একটি কমিটি বেছে নেবে। কমিটিতে থাকবেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা, প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রধান বিচারপতি। তবে একই সঙ্গে ওই রায়ে বলা হয়েছিল, নতুন আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত আগের আইন বলবৎ থাকবে। কিন্তু গত বছর অগস্ট মাসেই কেন্দ্র সরকার ‘নির্বাচন কমিশনার বিল, ২০২৩’ বিল পাশ করিয়ে নেয়। সেই বিলে বলা হয়, তিন সদস্যের প্যানেলে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন বিরোধীরা। তাঁদের কথায়, কমিশনার বাছাই করার কমিটি থেকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতিকে? কমিশনার নিয়োগের জন্য বাছাই কমিটির বৈঠককে ‘স্রেফ নিয়মরক্ষা’ বলে অভিহিত করে।
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলাও দায়ের হয়। শুক্রবার সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের উপর এখনই কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। ২১ মার্চ মামলাটি আবার শুনবে শীর্ষ আদালত।