S. Jaishankar

সংখ্যালঘুদের বিপন্নতা অপপ্রচার, সরব জয়শঙ্কর

এ দেশের ভোট চলাকালীন মণিপুরের সঙ্কট বা সংখ্যালঘুদের বিপন্নতা নিয়ে মন্তব্য করেছে আমেরিকা। রাশিয়া বলেছে, ওয়াশিংটন ভারতের ভোট ব্যবস্থা প্রভাবিত করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ০৮:৫০
Share:

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।

ঘর ঠিক থাকলে তবেই বাইরের সঙ্গে সম্পর্কও ঠিক থাকে বলে দাবি করে এ দেশের অন্দরে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ‘রাজস্থান বঙ্গাল মৈত্রী পরিষদ’, ‘কনসার্ন ফর ক্যালকাটা’ এবং ‘ক্যালকাটা সিটিজেনস ইনিশিয়েটিভ’ মঞ্চের অনুষ্ঠানে ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার সংক্রান্ত অভিযোগটিই ‘প্রথম বিশ্বের অপপ্রচার’ বলে কার্যত তোপ দাগলেন জয়শঙ্কর।

Advertisement

বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমেরিকা, কানাডার মতো কয়েকটি দেশ আমাদের প্রভাবিত করতে চায়। হ্যাঁ, ওটা পশ্চিমের কয়েকশো বছরের পুরনো অভ্যাস। ওরা হাত কচলানো, বশংবদ ভারতকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে হতাশায় ভুগছে। আমেরিকান পত্রপত্রিকাগুলিও ভারতের বিষয়ে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করছে। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম সরাসরি এ দেশে তাদের পছন্দের নেতা, দলকে তুলে ধরে। খবরের কাগজ কী আর করবে... কোনও একটা সূচক দেখিয়ে দেশের ইমেজ নষ্ট করবে।’’ এ দেশের ভোট চলাকালীন মণিপুরের সঙ্কট বা সংখ্যালঘুদের বিপন্নতা নিয়ে মন্তব্য করেছে আমেরিকা। রাশিয়া বলেছে, ওয়াশিংটন ভারতের ভোট ব্যবস্থা প্রভাবিত করছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর কার্যত হুঙ্কারের সুরে বলেন, ‘‘ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থা এত পলকা নয়, যে কেউ প্রভাবিত করবে। ভারতের আশপাশের দেশে গণতন্ত্রের অভাব নিয়ে এত দিন ওরা (আমেরিকা) কী করছিল।’’ নাম না-করে কার্যত আমেরিকাকে বিঁধেই তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের দেশে আদালতে ভোটের নিষ্পত্তি করতে হয়, তারা আবার আমাদের ভোট নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছে।’’

এ দেশের আর্থিক অসাম্য বা বেকারত্বের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে জয়শঙ্কর এ দিন আর্থিক বৃদ্ধির হারকেই তাস করেছেন। দাবি করেছেন, দশ বছরে ২৫ কোটি লোক দারিদ্রের থেকে বেরিয়ে এসেছে। দেশের স্বাধীন, স্বকীয় বিদেশনীতিতে তারই ছাপ বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিদেশনীতিতেও সব কা সাথ, সব কা বিকাশ করে দেখাচ্ছি। রুশ, ইরান, আমেরিকা, ইজ়রায়েল সবার সঙ্গে ভারত চলতে পারে। আমরা স্বকীয়, স্বাধীনচেতা আবার বন্ধুভাবাপন্ন। দারিদ্র নয়, এই প্রত্যয়টাই ভারতের ব্র্যান্ডিং করছে। হ্যাঁ, দেশের পশ্চিম বা উত্তর সীমান্তে কিছু সমস্যা আছে। কিন্তু ১০ বছরে আরও ২৫ বছর বীরদর্পে এগোনোর জ্বালানি পেয়ে গিয়েছি।’’

Advertisement

ভোটের আবহে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েও বার বার মন্তব্য করছেন জয়শঙ্কর। দুই কাশ্মীর মিলে যাওয়ার অনিবার্যতা দাবি করে তিনি এ দিনও বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত পিওকে-র বাসিন্দারাও সজাগ, জম্মু-কাশ্মীর ক্রমশ কত উন্নতি করছে। ৩৭০ ওঠানোর পরেই লোকে পিওকে-র কথা ভাবতে শুরু করেছে।’’ দেশের পূর্ব সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ এবং জনসংখ্যার বদলের অভিযোগ নিয়ে কি নরেন্দ্র মোদী সরকার নানা জটিলতার ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে আছে? এই প্রশ্নটিরও মুখোমুখি হন জয়শঙ্কর। তাঁর জবাব: ‘‘নরেন্দ্র মোদী ভয় পাওয়ার লোকই নন।’’ অনুপ্রবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তে বেড়া দেওয়া আমাদের অধিকার। সীমান্ত খোলা রাখা এক ধরনের অপদার্থতা, সম্ভবত ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতিও।’’ জয়শঙ্করের নতুন বই ‘হোয়াই ভারত ম্যাটার্স’-এর বাংলা তর্জমা ‘বিশ্ববন্ধু ভারত’ এ দিনই প্রকাশিত হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement