হুমায়ুন কবির। ফাইল সিনহা।
ব্রিগেডে ‘জনগর্জন’ সভায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তার পরে একই ভাবে হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক নিয়ামত শেখও প্রার্থী নিয়ে গোঁসা করেছিলেন। মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বহরমপুরে ওই দুই বিধায়কের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিদ্রোহী দুই বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর তার পরের দিন থেকেই দুই বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষী বাড়িয়ে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ।
সূত্রের খবর, হুমায়ুন কবীর আগে থেকে দু’জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী পেতেন। অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পরের দিন থেকে হুমায়ুনকে পুলিশ এসকর্ট দেওয়া হচ্ছে। দুই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়াও, এক জন অফিসার, দু’জন পুলিশ কনস্টেবল এবং একটি পুলিশের গাড়ি হুমায়ুনের সঙ্গে সব সময় থাকছে। একই ভাবে শুক্রবার থেকে নিয়ামত শেখকেও পুলিশ এসকর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হওয়ার পরে রাজ্যের কাছে বার বার চাওয়ার পরেও নিরাপত্তারক্ষী পাননি বাইরন বিশ্বাস। তিনি নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। তবে গত বছর দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দিতেই পুলিশি নিরাপত্তা পেয়েছেন। এ বার প্রার্থী ঘোষণার পরে দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করতেই গত মঙ্গলবার নিয়ামত ও হুমায়ুনের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে তাঁদের নিরাপত্তার বহর বাড়তেই অনেকেই বলছেন, এই শর্তেই কী তাঁরা বিদ্রোহে ইতি টানলেন? হুমায়ুনের দাবি, ‘‘আইবি-র রিপোর্ট রয়েছে আমার উপর হামলা হতে পারে। সে জন্যই পুলিশ আমাকে এসকর্ট দিয়েছে। দিন চারেক আগে সেই এসকর্ট পেয়েছি।’’ নিয়ামত শেখকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘যাঁর যাঁর উপর যে রকম হুমকি থাকে, তা পর্যালোচনা করে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়। হুমায়ুন কবীরকে কয়েক দিন আগেই (পুলিশ এসকর্ট) দেওয়া হয়েছে। আজ (শুক্রবার) থেকে নিয়ামত শেখকেও দেওয়া হল।’’
সূত্রের খবর, হুমায়ুন ও নিয়ামত দরবার করেছেন, তাঁরা দলে পুরনো হলেও কোনও ভাল পদ পাননি। তাই গুরুত্ব দাবি করেছেন দলের কাছ থেকে। পঞ্চায়েত ভোটে নিয়ামতের গাড়ির উপরে হামলাও হয়। তবে কলকাতার বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা কেউই বলতে চাননি।