স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন জেলাশাসক এস পুন্নমবলম। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
নির্ভয়ে ভোট দিতে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। শুক্রবার জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস পুন্নমবলমের কাছে এই দাবি জানালেন আসানসোলের দিলদারনগরের বাসিন্দারা। জেলাশাসক প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিয়েছেন। গত দু’বছরে বাসিন্দারা সাংসদকে এলাকায় দেখতে না পাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার থেকে ওই সব কেন্দ্র এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ শুরু হয়েছে। এলাকা ভাগ করে বাহিনীর সঙ্গে থাকছেন জেলার প্রশাসনিক অধিকারিকেরা। আরও কিছু স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
এ দিন সকাল থেকে দিলদারনগর এলাকায় রুট মার্চ শুরু হয়। ছিলেন জেলাশাসক এস পুন্নমবলম, পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী। প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাস জুড়ে আধিকারিকেরা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন। নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাওয়ার সময়ে যেন বাধার সৃষ্টি করা না হয়, বাসিন্দারা সেই অনুরোধ করেন জেলাশাসকের কাছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, অনেকে অভিযোগও করেন, গত দু’বছরে এলাকার সাংসদকে কাছে পাওয়া যায়নি।
জেলাশাসক জানান, এই মুহূর্তে এই কেন্দ্রের জন্য ৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। পরে আরও বাহিনী আসবে। তিনি বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে একাধিক স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কথা জানানো হয়েছে। তার ভিত্তিতে কিছু স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব এলাকায় রুট মার্চ চলছে। নির্বাচন কমিশন আরও কিছু স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চিহ্নিতকরণের কাজ করছে। ভোটারেরা যেন নির্ভয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।” তাঁর সংযোজন: “বাসিন্দারা স্বাভাবিক কথাবার্তা বলেছেন। তাঁদের কাছ থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
যদিও বিরোধী দলগুলির দাবি, শুধু রুট মার্চ করেই লাভ হবে না। ভোটের দিন স্পর্শকাতর বুথগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ভোটের আগের দিন থেকে তৃণমূলের লোকজনেরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ান। বিরোধী ভোটারদের হুমকি দিতে থাকেন। তাই এই শুধু রুট মার্চ করে লাভ নেই। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দাবি করেছি আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্র স্পর্শকাতর ঘোষণা করা হোক। ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা বলয়ে সেগুলি রাখা হোক। তা না হলে আগের রাত থেকে শাসক দলের লোকেরা এলাকায় দাপাতে শুরু করবে।”
বিরোধীদের কটাক্ষ, এত দিন তাঁরা বলতেন সাংসদকে এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় না। এ বার বাসিন্দারা তা বলছেন। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “বিরোধীরা যে হাল ছেড়ে দিয়েছেন, তা ওঁরা নিজেরাই প্রমাণ করে দিচ্ছেন। ভোটের এখনও এক মাস বাকি। তৃণমূল জনসম্পর্ক বাড়িয়ে মানুষের মন জয় করছে। বিরোধীরা প্রত্যাখ্যাত হয়ে হতাশ হচ্ছেন।”