—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার ঠিক আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে যে চলচ্চিত্রটি পর্দায় আসে, তাতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রে। কিন্তু সেই সদ্য-করা চরিত্র নয়, গোটা দেশ আজও সাড়ে তিন দশক আগে টিভির পর্দায় দেখা ‘রাম’ বলেই মনে রেখেছে অরুণ গোভিলকে। দূরদর্শনের ধারাবাহিকের যে চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন নিজের অভিনয় জীবনের কার্যত প্রথম ধাপে দাঁড়িয়ে। সেই অরুণ গোভিল এ বার লোকসভার লড়াইয়ে নেমেছেন মিরাট কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে। আগামী শনিবার সেই মিরাট থেকেই উত্তরপ্রদেশ জয়ের লক্ষ্যে প্রচারে নামছেন নরেন্দ্র মোদী। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে নিজের প্রথম জনসভার স্থান হিসেবে মিরাটকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।
লোকসভা ভোটে রামমন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রচারের ঝড় তোলার পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে বিজেপি। সেই কারণেই লোকসভার ঠিক আগে রামমন্দির উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেয় দল। পাশাপাশি জমিতে ‘রাম’ আবেগ জিইয়ে রাখতে পর্দার রামকে তাঁর পৈত্রিক এলাকা মিরাট থেকে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিরাট তথাকথিত ভাবে বিজেপির নিরাপদ আসন বলেই পরিচিত। বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র আগরওয়াল গত ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ওই আসনে জিতে এসেছেন। তাঁর পরিবর্তে অরুণ গোভিলকে দাঁড় করিয়ে মিরাট-সহ আশেপাশের কেন্দ্রগুলিতে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ করাই লক্ষ্য বিজেপির।
এ বারের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে আশিটি আসনই জিতে নেওয়া বিজেপি শিবিরের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব যদি মিরাট-সহ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কেন্দ্রগুলিতে বিজেপি ভাল ফল করে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ২৯টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৯টিতে গত বার বিজেপি জিতেছিল। এ যাত্রায় সব ক’টি আসন জিততে রাষ্ট্রীয় লোক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। ৩০ মার্চ মিরাটের সভায় রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রধান জয়ন্ত চৌধরির উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। জয়ন্ত এনডিএ শিবিরে যোগ দেওয়ায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষক ভোটের বড় অংশ তাদের পাশে থাকবে বলে বিজেপি মনে করছে।
অরুণের দুই সহশিল্পী দীপিকা চিখলিয়া এবং অরবিন্দ ত্রিবেদীকে ১৯৯১ সালে লোকসভায় প্রার্থী করেছিল বিজেপি। ওই একই ধারাবাহিকে যথাক্রমে সীতা এবং রাবণের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। দু’জনেই জিতে সাংসদ হন। পরের বছরই ভাঙা পড়ে বাবরি মসজিদ।
মসজিদের জায়গায় আজ মাথা তুলেছে মন্দির। ‘রাম’ তাই ভোটপ্রার্থী।