রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
নির্বাচনী ইস্তাহারে আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। এ বার রাজস্থানের বিকানেরে লোকসভা ভোটের প্রচারে আবারও সেই কথা মনে করালেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি জানালেন, কংগ্রেস ভোটে জিতলে দেশের প্রতি গরিব পরিবারের এক জন করে মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ টাকা পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার রাজস্থানের সভায় রাহুল কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেন। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির কথায়, ‘‘কংগ্রেস সরকার দেশের প্রত্যেক গরিব পরিবারের এক জন করে মহিলার অ্যাকাউন্টে বছর এক লক্ষ টাকা পাঠাবে। আপনি যদি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন, তা হলে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে খটাখট ৮,৫০০ টাকা করে প্রবেশ করবে। এক ঝটকায় আমরা হিন্দুস্তান থেকে দারিদ্র মিটিয়ে দেব।’’
এর পরেই রাহুল বিজেপিকে একের পর এক তোপ দাগেন। রাহুল জানান, কৃষকরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) চাইছেন। বেকার তরুণেরা চাকরি চাইছেন। মূল্যবৃদ্ধি থেকে নিস্তার চাইছেন মহিলারা। অথচ কেউ শুনছে না। রাহুল এ-ও মনে করেন, দেশে এখন সব থেকে বড় সমস্যা মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব। কিন্তু সংবাদমাধ্যম এই বিষয়গুলিকে তুলে ধরছে না। প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও কটাক্ষ করেছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘১৫-২০ জন শিল্পপতির ঋণ মকুব করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই টাকায় ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের ২৪ বছর ধরে বেতন দেওয়া যেত।’’ এখানেই থামেননি তিনি। আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন। রাহুল দাবি করেছেন, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে শিল্পপতিদের থেকে টাকা নিয়েছে বিজেপি। অথচ কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে। তাঁর মতে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচন আসলে ২০-২৫ জন কোটিপতি এবং গরিব মানুষদের লড়াই। ওয়েনাড়ের বিদায়ী সাংসদ এ-ও জানিয়েছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে নির্বাচনী ইস্তাহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা হবে।
জানুয়ারি মাসে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় রাহুল জানিয়েছিলেন, তাঁর এই যাত্রা পাঁচটি ন্যায়ের উপরে দাঁড়িয়ে— মহিলা, তরুণ, কৃষক, শ্রমিক এবং ভাগীদারি বা জনসংখ্যা অনুযায়ী ক্ষমতায় অংশগ্রহণের ন্যায়ের দাবি। সেই ন্যায়ের অঙ্গীকারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার। সেখানে কৃষকদের জন্য ফসলের ন্যূনতম সহায়কমূল্য নিশ্চিত করার আইনি অধিকার সুরক্ষিত করার কথা বলা হয়েছে। দেশের ৩০ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি, ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদহীন স্বাস্থ্যবিমা, মহিলাদের আর্থিক সহায়তা, জাতগণনা এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জাতভিত্তিক সংরক্ষণ (এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের জন্য), আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের ইস্তাহারে।