—প্রতীকী চিত্র।
এক সময়ের ‘বামদুর্গ’ আউশগ্রামে বামেরা এখন কার্যত প্রান্তিক শক্তি। লোকসভা ভোটের আগে হারানো জনসমর্থন ফিরে পেতে চেষ্টার কসুর করছে না সিপিএম। ছোট সভা থেকে শুরু করে পাড়ায় পাড়ায় বাড়ির উঠোনে চাটাই বৈঠক করছে তারা। সিপিএম সূত্রের খবর, সেই চাটাই বৈঠকে হাজির অনেক মহিলা রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের প্রসঙ্গ আনছেন। সিপিএম নেতারা তাঁদের আশ্বস্ত করছেন এই বলে যে, বামেরা ক্ষমতায় এলেও ওই প্রকল্প চালু থাকবে।
গত লোকসভা ভোটে আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা থেকে মাত্র ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। গত পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের পাঁচটি জেলা পরিষদ আসনেই বিজেপিকে তিনে ঠেলে বামেরা তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে। সিপিএমের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের ফল কর্মীদের মনোবল বাড়িয়েছে। সেই কারণেই প্রচারে অনেক বেশি চাঙ্গা দেখাচ্ছে তাঁদের। আউশগ্রামের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক কার্তিক চন্দ্র বাগ, বাসুদেব মেটেরা নিজের এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন।
সিপিএমের গুসকরা পশ্চিম এরিয়া কমিটির সদস্য সুশান্ত ঘোষ, রাজু ধীবরেরা বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে দলের কর্মী-সমর্থকেরা বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছেন। অনেকেই ফিরে আসছেন। তৃণমূল মানুষকে বোঝাচ্ছে, তাঁরা ক্ষমতায় না থাকলে লক্ষ্মী ভান্ডারের মতো প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মানুষকে বোঝাচ্ছি, মানুষের স্বার্থে যে জনমুখী প্রকল্প রয়েছে, তা কখনই বন্ধ হবে না।’’ পাশাপাশি বামেরা ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থান, বাসস্থান, উন্নত মানের কােজর ব্যবস্থা হবে, আশ্বাস তাঁদের। এর সঙ্গেই মানুষের কথা শুনে কলকারখানা তৈরি, দুর্নীতি বন্ধ, ফসলের দাম পাওয়ার ব্যবস্থা
করা হবে।
যদিও তৃণমূলের যুবনেতা শান্তাপ্রসাদ রায়চৌধুরীর দাবি, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতা বেড়েছে। বিরোধীদের মুখের উপরে সে কথা জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। বাম জমানায় আউশগ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখন প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়ন পৌঁছেছে। মানুষের মনে তৃণমূল ছাড়া কিছু নেই। বিজেপিরও বক্তব্য, সিপিএম অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে। আউশগ্রামের মানুষ বুঝে গিয়েছে, তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে বিজেপি। সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “যে সমস্ত সরকারি প্রকল্প, যেগুলিতে জনস্বার্থ রয়েছে সেগুলির উন্নয়ন ঘটানো হবে। মানুষের উন্নয়ন দরকার। এর জন্য দরকার কাজ। লক্ষ্মীর ভান্ডারের থেকে বেশি দরকার মানুষের কাজের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। কাজ বন্ধ করে দিয়ে ত্রাণ দিয়ে মানুষের উন্নয়ন সম্ভব নয়। জনগণের টাকায় সরকারের দেওয়া ত্রাণকে ব্যক্তির দেওয়া হিসাবে দেখাতে চাইছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। এটা অপরাধ।’’