এই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ইতিমধ্যে বর্তমান সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। তারপরেই শান্তনুকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে পোস্টার পড়ল এলাকায়।
বুধবার সকালে বনগাঁ স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এবং কল্যাণী লোকালেও পোস্টার দেখা যায়। অনুমান করা হচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে কেউ এগুলি সাঁটিয়েছে। একই পোস্টার লোকাল ট্রেনের কামরায়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেখা যাচ্ছে।
পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘তোলাবাজ শান্তনুকে একটি ভোটও নয়। শান্তনু ঠাকুর গত পাঁচ বছরে করেছে কী? চাকরি বিক্রি আর তোলাবাজি ছাড়া আবার কী!’ পোস্টারের নীচে লেখা, ‘প্রচারে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি বাঁচাও কমিটি।’
বিষয়টি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন শান্তনু। তাঁর কথায়, ‘‘এই কাজের সঙ্গে তৃণমূল জড়িত। তৃণমূল রাজনীতিতে এখনও পরিপক্ক হতে পারেনি। প্রার্থী ঘোষণার পরে মমতা ঠাকুর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। এ বার আমাকে কালিমালিপ্ত করতে তৃণমূল এই নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শান্তনুর সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে জিততে না পেরে তৃণমূল ভেবে পাচ্ছে না, কোনও লাইনে চলা উচিত।’’ শান্তনুর পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের কথায়, ‘‘প্রার্থী হিসাবে শান্তনু ঠাকুরের নাম ঘোষণা হতেই তৃণমূল কাঁপছে। আতঙ্ক থেকে এ সব ঘৃণ্য কাজ করছে।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ঘটনাটিকে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল বলে দাবি করেছে। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি উপর থেকে নীচ পর্যন্ত আপাদমস্তক গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার একটা দল। শান্তনুকে গত পাঁচ বছর এলাকায় দেখা যায়নি। উন্নয়ন করেননি। বিজেপির লোকজনও তা জানেন। সে কারণেই তাঁরা শান্তনুকে ভোট না দেওয়ার আবেদন করছেন। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় দলের কোন্দল বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় বিধায়ক এবং নেতাদের একাংশের সঙ্গে শান্তনু-দেবদাসদের দূরত্ব বেড়েছে। দলীয় কর্মসূচিতে এক সঙ্গে সব পক্ষকে কার্যত দেখাই যায় না। দিন কয়েক আগে বিজেপির এক নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, বনগাঁয় বিজেপিকে বাঁচাতে একজোট হতে চাই।