Lok Sabha Election 2024

উত্তরপ্রদেশে মোদীর তাস উন্নয়ন-হিন্দুত্ব

রাজনৈতিক শিবিরের মতে এ সবারের লোকসভা নির্বাচনে হিন্দুত্ব এবং উন্নয়নকে তুরুপের দুই তাস হিসেবে কৌশলের সঙ্গে কাজে লাগাবেন যে মোদী, তা লখনউয়ের আজকের অনুষ্ঠানে স্পষ্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫০
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

গত মাসে অযোধ্যার রামমন্দিরের আবেগের জের এবং সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলির প্রচার ও বিজ্ঞাপন। এই দুইয়ের মিশেলে আজ উত্তরপ্রদেশের রাজধানীতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিঁধলেন বিরোধী শক্তিকে। একই সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সদ্য প্রাক্তন রাজনৈতিক সহকারী তথা কংগ্রেসের উত্তরপ্রদেশ পরামর্শদাতা পরিষদের অংশ আচার্য প্রমোদকে পাশে নিয়ে কল্কিধামের ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করলেন।

Advertisement

রাজনৈতিক শিবিরের মতে এ সবারের লোকসভা নির্বাচনে হিন্দুত্ব এবং উন্নয়নকে তুরুপের দুই তাস হিসেবে কৌশলের সঙ্গে কাজে লাগাবেন যে মোদী, তা লখনউয়ের আজকের অনুষ্ঠানে স্পষ্ট। কল্কিধামের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করে তাঁর বক্তব্য, “একের পর এক আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা, সাংস্কৃতিক গৌরবের অনুভূতি আমার হয়ে চলেছে। বিশ্বনাথ ধামের বৈভবকে কাশীনাথ ধামে দেখেছি। মহাকালের মহালোকের মহিমা দেখেছি। সোমনাথের বিকাশ দেখেছি। কেদারধামের পুনর্নির্মাণ দেখেছি। এক দিকে যেমন তীর্থস্থানের বিকাশ হচ্ছে অন্য দিকে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। মন্দির নির্মাণ হচ্ছে আবার মেডিক্যাল কলেজও তৈরি হচ্ছে। বিদেশ থেকে প্রাচীন মূর্তি যেমন আসছে তেমন বাণিজ্যেও লগ্নি হচ্ছে।”

তিনি যে পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রেখেছিলেন সে কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সময়ের কালচক্র ঘুরে গিয়েছে। এক নতুন সময় আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। এই আগমনকে প্রাণভরে স্বাগত জানাই। লালকেল্লা থেকে দেশকে বিশ্বাস করিয়েছিলাম, এই সময়টাই ঠিক সময়। যে দিন অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম ২২ জানুয়ারি থেকে নতুন কালচক্রের সূচনা হচ্ছে। প্রভু রাম যখন শাসন করেছিলেন তার প্রভাব হাজার বছর ছিল। তেমনই রামলালা বিরাজমান হওয়ায় আগামী হাজার বছর পর্যন্ত ভারতের জন্য নতুন যাত্রার সূচনা হচ্ছে।”

Advertisement

এর পরেই কল্কিধামের প্রতিষ্ঠার জন্য আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের তারিফ করেন নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, মাত্র কিছু দিন আগেই প্রকাশ্যে রাম রাষ্ট্রের কথা বলে কংগ্রেস থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম। এর পর তিনি ‘আজীবন মোদীর সান্নিধ্যে’ থাকার ঘোষণা করেন। এ দিন তাঁর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম অনেক পরিশ্রম করেছেন। ভগবান রামের মতো কল্কির অবতারও হাজার বছরের রূপরেখা নির্ণয় করবে। আমরা বলতেই পারি কল্কি কালচক্রের পরিবর্তনের প্রণেতাও। প্রমোদ কৃষ্ণমজিকে রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে চিনতাম। জানতে পারলাম তিনি এক জন আদ্যোপান্ত ধার্মিক মানুষ। কল্কি মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য আগের সরকারের সঙ্গে তাঁকে আইনি লড়াই লড়তে হয়েছে। তাঁকে বলা হয়েছে মন্দির তৈরি করলে শান্তি বিঘ্নিত হবে। আমাদের সরকার তাঁকে নির্বিঘ্নে এই মন্দির তৈরির অনুমতি দিয়েছে।”

হিন্দুত্ব চর্চার পাশাপাশি মোদী আজ লখনউয়ে দশ লাখ কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। উৎপাদন শিল্প, তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, আবাসন, পর্যটন, অপ্রচলিত শক্তির মতো ক্ষেত্রে প্রায় ১৪ হাজার প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন তিনি আজ। মোদীর কথায়,“ডাবল ইঞ্জিন সরকার দিবারাত্রি কাজ করছে রাজ্যবাসীর জীবন সহজ করার লক্ষ্যে। যত ক্ষণ না সরকারি যোজনার সুফল প্রতিটি মানুষেরকাছে পৌঁছবে।”

উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের কথা তুলে মোদীর বক্তব্য, এই রাজ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক এক্সপ্রেসওয়ে এবং বিমানবন্দর রয়েছে। কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ দাবি করেছেন, ‘লাল ফিতের’ সংস্কৃতিকে বদলে তাঁর সরকার ‘লাল কার্পেটের’ সংস্কৃতি এনেছে। গত ৭ বছরে উত্তরপ্রদেশে অপরাধ কমেছে। বাণিজ্য এবং উন্নয়নের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement