প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
স্থানীয় বিজেপি নেতাদের একাংশ গত কয়েক দিন ধরে দাবি করছিলেন, প্রধানমন্ত্রী এসে নাগরিকত্ব আইন বলবৎ করার কথা বলবেন। বিজেপিপন্থী মতুয়া-নমঃশূদ্রদের অনেকেই সেই অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু শনিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে জনসভা থেকে সে বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না প্রধানমন্ত্রী। তাতে অনেকে যেমন হতাশ, মতুয়া প্রধান দক্ষিণ নদিয়ায় বিজেপি নেতাদের অনেকে অস্বস্তিতেও পড়েছেন।
কিছু দিন আগেই দক্ষিণ নদিয়ায় নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির হাতে থাকা রানাঘাট কেন্দ্রে দলের অনেক নেতা-কর্মীর আশা ছিল, মোদী তার ‘জবাব’ দেবেন। কিন্তু সিএএ নিয়ে এ দিন কিছুই বলেননি। নীরব মহুয়া মৈত্রকে নিয়েও। ২০১৪ সালে কৃষ্ণনগরে দাঁড়িয়েই মোদী উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এ বার নীরব কেন? রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বিজেপির যে নবদ্বীপ জ়োনের এই জনসভা, তার মধ্যে রানাঘাট কেন্দ্রটি মতুয়া প্রধান হলেও উত্তর নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটই প্রধান। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কথা তুললে সংখ্যালঘুরা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়তে পারেন।
যদিও সভায় হাজির মতুয়াদের একটা বড় অংশ দৃশ্যতই হতাশ। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, সিএএ চালু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী না হোন, অন্য কেউ অন্তত মুখ খুলতে পারতেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁরা তৃণমূলপন্থী, তাঁদের আবার দাবি, কিছু বলার নেই বলেই বলেননি।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘প্রথম থেকে বলছি, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘উনি কী করে বলবেন যে, ওটা অমিত শাহের জন্য রেখে দিয়েছেন! আসলে ওঁরা দ্বিধায় আছেন যে অসমে, উত্তর-পূর্বে গোলমাল বেধে যাবে।’’ চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমানের দাবি, ‘‘এখানে মোদী সিএএ নিয়ে বলবেন না। জানেন, মুসলিমরা মানবে না।’’ রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের দাবি, ‘‘নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বার বার অবস্থান স্পষ্ট করেছে দল। নতুন কিছু বলার নেই।"