(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে) । —ফাইল চিত্র।
দুই সভামঞ্চের ভৌগোলিক দূরত্ব মাত্র আট কিলোমিটার। দু’টি সভার সময়ের ব্যবধান ২৪ ঘণ্টারও কম। একটি সভা করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মমতার সভা মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে। আর মোদী আসছেন কৃষ্ণনগরের ‘রানিমা’ অমৃতা রায়ের প্রচারে।
গরমে নাভিশ্বাস উঠছে দক্ষিণবঙ্গের। নদিয়া জেলার মাঝখান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা যাওয়ায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে নদিয়ার পরিস্থিতি। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামছেই না নদিয়ার তাপমাত্রা। তার মধ্যেই ২ মে, বৃহস্পতিবার মমতার সভা রয়েছে তেহট্টের দেবনাথপুর কৃষক বাজারের কাছে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ক্রীড়াঙ্গনে। তার ঠিক তার পরের দিন ওই একই এলাকায় আর একটি মাঠ—শ্যামনগর ফুটবল ময়দানে সভা করবেন মোদী। ২৪ ঘণ্টারও কম ব্যবধানে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে ‘টক্কর’ হবে মোদী-মমতার। দুই শিবিরের দুই প্রধানের সভা ঘিরে সাজ সাজ রব। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দুই হাই ভোল্টেজ সভার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
আগামী ১৩ মে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। প্রার্থিতালিকা ঘোষণার আগেই অবশ্য কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে নির্বাচনী সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে, কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত ধুবুলিয়া সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে সভার মাধ্যমে মধ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক মাসেরও কম ব্যবধানে প্রায় একই এলাকায় পৃথক দু’টি মাঠে সভা করতে চলেছেন মোদী এবং মমতা। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের বাড়তি গুরুত্বের কথা আগেই জানিয়েছেন মোদী। ডাক দিয়েছেন যে কোনও মূল্যে মহুয়াকে পরাজিত করার। আগেও কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতার সমর্থনে সভা করেছেন। ফোনেও ওই বিজেপি প্রার্থীকে উদ্দীপনা দিয়েছেন।
অন্য দিকে, এথিক্স কমিটির রায়ে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরেই মহুয়াকে প্রার্থী করার কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মমতা। নির্বাচন পর্বের সূচনায় কৃষ্ণনগর কেন্দ্র বেছে নিয়ে এই কেন্দ্রের বিশেষ গুরুত্বের কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনিও। সব মিলিয়ে দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র যেন ‘সম্মানরক্ষার’ যুদ্ধক্ষেত্র।
প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। বুধবার সকালে মাঠ পরিদর্শন করেন বিজেপির জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। বিজেপির রাজ্য পরিদর্শক এবং বেশ কয়েক জন কেন্দ্রীয় নেতা স্থানীয় নেতা-কর্মীর সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা নিয়ে সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর এসেছে যে, ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তেহট্টে সভা করবেন। সভার জন্য অনুমতির প্রয়োজন ছিল। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সমস্ত ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছি। সাংগঠনিক প্রস্তুতিও শেষ। আশা করছি, লক্ষাধিক লোকের জমায়েত হবে।’’
তৃণমূলের সভার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। সভা সাজানোর কাজ চলছে জোরকদমে। সভা সফল করতে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রস্তুতি সভা করছেন স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী সভার প্রস্তুতি দেখভাল করছেন কৃষ্ণনগর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তথা জেলা সভাপতি মহুয়া। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন অঞ্চল এবং ব্লকভিত্তিক প্রস্তুতি সভা করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সভার জমায়েতকে টপকে যাবে তেহট্টের সভা।’’