প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-র আসন ‘চারশো পার’-এর যে ডাক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত করতে হলে দক্ষিণ ভারতে ভাল ফল করতেই হবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটকে। কিন্তু তামিলনাড়ুতে এডিএমকে-র এনডিএ-ত্যাগে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তামিলনাড়ু সফরে গিয়ে আজ কংগ্রেস এবং ডিএমকে-কে তীব্র আক্রমণ করেছেন মোদী। একই সঙ্গে, উদারহস্তে ১৭,৩০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের পরিকাঠামো প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন রাজ্যের জন্য।
থুথুকুড়িতে আজ প্রধানমন্ত্রী ইউপিএ সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘আজ যে প্রকল্পগুলি নিয়ে এসেছি, সে গুলি কয়েক দশক ধরে এখানকার মানুষের দাবি। যাঁরা এখন রাজ্যের ক্ষমতায়, তাঁরাই তখন দিল্লিতে সরকার চালাতেন। কিন্তু, তাঁরা কখনই আপনাদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেননি।’’
প্রসঙ্গত গত কালই মোদী দ্রাবিড় দলের প্রতিষ্ঠাতা এম জি রামচন্দ্রন (এমজিআর) এবং তাঁর উত্তরসূরি জে জয়ললিতার প্রশংসা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন সরকার এমজিআর-এর শাসন পদ্ধতিকে অপমান করছে। এমজিআর-এর শাসন-পদ্ধতি শুধু প্রয়াত জয়ললিতাই বহাল রেখেছিলেন।
উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাসের পাশাপাশি আজ ডিএমকে-কে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রীর তোপ, ‘‘তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার, কেন্দ্রীয় যোজনাগুলির নিয়ে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি। তারা এমনই দল যে কাজ না করে কৃতিত্ব নিতে চায়। অথচ কে না জানে, আমাদের যোজনাগুলিতে তারা নিজেদের সিলমোহর বসিয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই প্রথম কৃষক, দরিদ্র, নারী এবং যুবাদের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল দক্ষিণ প্রান্তে এসে পৌঁছচ্ছে। মোদী বলেন, ‘‘আজকের দিনে আরও একটি পরিবর্তন তামিলনাড়ুর মানুষ টের পাচ্ছেন, দেশের বাইরে থেকেও। তা হল বিশ্বে ভারতের মাথা ক্রমশ উঁচু হচ্ছে।’’ প্রবাসী তামিল সম্প্রদায়কে বার্তা দিতে চেয়ে মোদী বলেন, ‘‘আজকের তামিল সম্প্রদায়কে অনেক সম্মানের সঙ্গে বিশ্ব দেখছে। এই পরিবর্তন এসেছে স্থায়ী
উন্নয়নমুখী শক্তিশালী বিজেপি সরকারের জন্যই।’’
দাক্ষিণাত্যে দাঁড়িয়ে হিন্দুত্বের তাস খেলতেও ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। সংসদের বাজেট অধিবেশনে অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে একটি প্রস্তাবের আলোচনায় অনুপস্থিত ছিলেন ডিএমকে-র সাংসদরা। তা নিয়ে মোদীর খোঁচা, ‘‘ডিএমকে সাংসদদের এই ব্যবহারই বুঝিয়ে দিচ্ছে, আপনাদের বিশ্বাসের কোনও মূল্যই ডিএমকে নেতাদের কাছে নেই। বিজেপি মনে করে প্রতিটি মানুষই একটি বড় পরিবারে সদস্য।’’
প্রধানমন্ত্রী আজ যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে হরিৎ নৌকা উদ্যোগের অধীনে ভারতের প্রথম দেশীয় সবুজ হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত অভ্যন্তরীণ জলপথ যান। এ ছাড়াও, ৭৫টি বাতিঘরের লাইটহাউস ট্যুরিজ়ম কফি টেবিল বুক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গত এই দশকে আমাদের বন্দরের ক্ষমতা
দ্বিগুণ হয়েছে, সামুদ্রিক ক্ষেত্রের বৃদ্ধি বহুগুণে বাড়তে চলেছে। এতে তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’’